জ্বরজারি ও ঠান্ডার সমস্যাটি হলো সবচেয়ে কমন শারীরিক অসুস্থতা। অনিয়ম, ঠান্ডার প্রাদুর্ভাবসহ যেকোন কারণেই দেখা দিতে পারে এই সমস্যা দুইটি। তবে সাধারণত ঠান্ডা ও জ্বরের সমস্যা নির্দিষ্ট একটি সময়ের মাঝেই সেরে যায়। যদি এই সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন যাবত রয়ে যায় তবে বুঝতে হবে এর পেছনে রয়েছে অন্য কোন লুকায়িত অসুস্থতা অথবা কারণ।
ঘনঘন জ্বর আসা, জ্বর রয়ে যাওয়া, কফ ওঠা, নিঃশ্বাসে সমস্যা দেখা দেওয়ার মতো লক্ষণগুলো দীর্ঘদিন রয়ে গেলে বুঝতে হবে নিউমোনিয়ার সমস্যা রয়েছে। এমনটাই জানাচ্ছেন ক্যালিফোর্নিয়ার মেমোরিয়াল কেয়ার অরেঞ্জ কোস্ট মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসক ক্রিস্টিন আর্থার। তিনি আরও জানান, এমন ক্ষেত্রে বেশিরভাগ রোগী ফুসফুসে ব্যথা অনুভব করেন। ভেবে থাকেন সাধারণ শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে প্রবল ঠান্ডার সমস্যা থেকে নিউমোনিয়া হয়ে যায়। দ্রুততম সময়ে চিকিৎসা শুরু না করলে গুরুতর অবস্থা দেখা দিতে পারে।
মুখে বাজে স্বাদ দেখা দেওয়া, সাথে শুকনো কাশি ও গলায় ফ্যাসফ্যাসে ভাব দেখা দিলে বুঝতে হবে এর পেছনে রয়েছে পরিপাকজনিত সবচেয়ে কমন সমস্যা- অ্যাসিড রিফ্লাক্স। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে এই সমস্যায় ভুক্তভোগীদের সংখ্যা। এই সমস্যার লক্ষণগুলো হলো- বুক জ্বালাপোড়া করা, মাথা ঘোরানো, ঢেঁকুর ওঠা, বমিভাব দেখা দেওয়া ও অন্যান্য। অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যাটি বৃদ্ধি পেলে তা থেকে জ্বর ও এ ধরনের শারীরিক লক্ষণ দেখা দেয় অনেক সময়। ডাঃ আর্থার অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যাটি প্রতিরোধে ঝাল খাবার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় সোজা হয়ে শুয়ে বিশ্রাম করা ও ঘনঘন পানি পানের জন্য বলেছেন।
ঠান্ডার সমস্যাটি দীর্ঘদিন যাবত রয়ে যাওয়ার অন্যতম বড় একটি কারণ হতে পারে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যাকে বলা হচ্ছে ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি (Immunodeficiency). শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রয়োজন ও স্বাভাবিকের চাইতে দুর্বল হলে শরীর সাধারণ ইনফেকশনের বিরুদ্ধেও লড়ায় করার মতো শক্তিশালী থাকে না। যার ফলস্বরূপ দেখা দেয় পরিপাকের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা, পানিশূন্যতা, মানসিক চাপ, জেনেটিক্যাল সমস্যা, ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ। ডাঃ আর্থার জানান, এমন সমস্যায় বিশেষ যত্ন ও চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সিডার-সিনাই কেরলান-জব ইন্সটিটিউটের ফিজিশিয়ান জশয়া স্কট জানান, অনেক সমস্যা ভাইরাসজনিত ভাইরাল অসুস্থতা ভালো হয়ে গেলেও নতুন লক্ষণ দেখা দেয়। সাইনাসের সমস্যা, মাথাব্যথা ও ক্ষেত্র বিশেষে জ্বর। এমন সমস্যা তখনই হয়, যখন ঠাণ্ডার সমস্যা থেকে মানবশরীরে উপযুক্ত পরিবেশে সাইনাসাইটিসের ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে।
সাধারণ ঠান্ডার সমস্যা, নাক থেকে পানি পড়া, কাশির উপদ্রবকে খুব সহজেই ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার লক্ষণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এই লক্ষণগুলো অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থেকেও দেখা দিতে পারে। আবহাওয়া ও মৌসুমের উপর ভিত্তি করে এই সমস্যা থাকতে পারে লম্বা সময়ের জন্য। ঠান্ডার লক্ষণ সমূহের সাথে অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় চোখ চুলকানো ও চোখে পানি আসার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ঠান্ডাজনিত সমস্যার মাঝে সবচেয়ে দেরীতে সাড়ে কাশি ও কফের সমস্যা। যার অন্যতম কারণ হতে পারে ওষুধ। বেশ কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া স্বরূপ কাশির সমস্যা দেখা দেয়। তবে এর সাথে গলাব্যথা, বন্ধ নাক বা সাইনাসের সমস্যা থাকবে না।
আরও পড়ুন: