চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করার মতো এমন দৈনন্দিন কাজকে হেলাফেলা করার জন্যই কিন্তু বেশিরভাগ সময় চুলের নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। সঠিক নিয়মে চুলে শ্যাম্পু ব্যবহারে চুলের ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব হয়।
চুলের আগা ফেটে যাওয়া, বেশি চুল পড়া, চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলোর পেছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল নিয়মে শ্যাম্পু ব্যবহার দায়ী। সহজ কিছু নিয়ম মেনে সঠিকভাবে চুলে শ্যাম্পু ব্যবহারে চুলের বেশিরভাগ সমস্যাই সমাধান করা সম্ভব হয়।
আজকে জানানো হলো চুলে শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহজ ও উপযুক্ত কিছু নিয়ম।
তেল ও ময়লার কারণে মাথার ত্বকের রোমকূপ বন্ধ হয়ে থাকে। শুধু শ্যাম্পু ব্যবহারে এই ময়লা সহজে দূর হতে চায় না। তাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হলো, প্রতিবার শ্যাম্পু ব্যবহারের আগে মাথায় গরম ভাপ নেওয়া। এর জন্য একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে পানি নিংড়ে নিতে হবে। ভেজা তোয়ালে গরম থাকা অবস্থাতেই পুরো চুলে ভালোভাবে জড়িয়ে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর চুলে শ্যাম্পু করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রতিরোধ করুন চুলের আগা ফেটে যাওয়া
ভাপ নেওয়ার পর চুলের গোড়ায় আঙ্গুলের সাহায্যে কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করলে উপকার পাওয়া যাবে। এর ফলে মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল ভালোভাবে হয় ও দুর্বল চুল ম্যাসাজের সময় গোড়া থেকে উঠে চলে আসে। এতে শ্যাম্পু করার সময় ঝামেলা কম হয়।
চুল ও মাথার ত্বকের জন্য গরম পানি খুবই ক্ষতিকর। শ্যাম্পু করার সময় কিংবা সাধারণ গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার করা থেকে একেবারেই বিরত থাকতে হবে। গোসলে গরম পানি ব্যবহারে মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের পরিমাণ একেবারেই কমে যায় ও কিউটিক্যালস একদম খুলে যায়। ফলে মাথার ত্বকের আর্দ্রতাও নষ্ট হয়। অন্যদিকে ঠাণ্ডা অথবা কুসুম গরম পানিতে শ্যাম্পু করলে অথবা গোসল করলে চুল ও মাথার ত্বকের কোন ক্ষতি হয় না এবং ত্বকের তেলের পরিমাণ সঠিক থাকে।
শ্যাম্পু কেনার আগে ভালোভাবে দেখে নিতে হবে শ্যাম্পুতে প্যারাবিন ও সালফেট যেন না থাকে। শ্যাম্পুতে সালফেট অ্যাড করা হয় প্রিজার্ভেটিভ হিসেবে ও প্যারাবিন ব্যবহৃত হয় ঘন ফেনা তৈরির জন্য। এই দুইটি কেমিক্যাল উপাদান ত্বকের নানান ধরণের সমস্যা ও অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব তৈরির জন্য দায়ী। সম্প্রতি গবেষণা থেকে আরও জানা গেছে, শিশুদের চোখের স্বাস্থ্যের জন্যেও এই উপাদান দুইটি ক্ষতিকারক। তাই হার্বাল শ্যাম্পু ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে।
আরও পড়ুন: চুল পড়া কমাবে রসুন!
সাধারণত চুলের গোড়ায় ময়লা বেশি আটকে থাকে। সাথে মাথার ত্বকের মরা চামড়া তো থাকেই। তাই শ্যাম্পু ব্যবহারের সময় মাথার ত্বকে ভালোভাবে শ্যাম্প্যু ম্যাসাজ করতে হবে। এরপর পুরো চুলে শ্যাম্পু ম্যাসাজ করতে হবে।
হার্বাল শ্যাম্পুতেও সহনীয় মাত্রায় কেমিক্যাল থাকে। তাই প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এক কিংবা দুই দিন পরপর শ্যাম্পু ব্যবহার করা সবচেয়ে উপকারি। এতে চুল পরিষ্কার থাকার পাশাপাশি চুল কোমল থাকবে। প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহারে চুল অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়।
লম্বা সময় নিয়ে শ্যাম্পু করার ফলে চুলের ঘনত্ব কমে যায় অনেকখানি। চুল হয়ে যায় ভঙ্গুর ও পাতলা। ফলে খুব সহজেই চুলের আগা ফেটে যায় অথবা চুল মাঝ বরাবর ভেঙ্গে যায়। তাই চুলে শ্যাম্পু করার জন্য ১০-১৫ মিনিট সময়ের বেশি নেওয়া একেবারেই উচিৎ নয়।