ভিটামিন-সি হল অন্যতম প্রয়োজনীয় ও পানিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন, যা প্রতিদিনের পুষ্টি উপাদানের মাঝে উপস্থিত থাকা খুবই জরুরি। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বৃদ্ধি পাবে, ততই সুস্থ থাকা সম্ভব হবে। ভিটামিন-সি সার্বিকভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিতে কাজ করে। এছাড়া ক্যানসার, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ও বয়সের গতিকে স্লথ করতে ভিটামিন-সি খুবই জরুরি। সুস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ প্রয়োজনীয় ভিটামিন-সি পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যাবে যে আটটি ফল থেকে, তার তালিকা জেনে নিন।
বিশেষজ্ঞদের মতে পেয়ারা হলো সবচেয়ে ভালো ও উৎকৃষ্ট ফল যা থেকে পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ পরিমাণ ভিটামিন-সি।বেশ কিছু গবেষণা থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায় এবং দেখা গেছে নিয়মিত পেয়ারা গ্রহনে সার্বিকভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ পেয়ারা থেকে পাওয়া যাবে ২২৮.৩ মিলিগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন-সি।
মৌসুমি ও জনপ্রিয় এই ফলটি থেকেও পাওয়া যাবে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি। যা কোলাজেন সিন্থেসিস ও রক্তনালীকার স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। ভিটামিন-সি ছাড়াও লিচু থেকে আরও পাওয়া যাবে পটাশিয়াম, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচু থেকে মিলবে ৭১.৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি।
আমাদের বিভিন্ন প্রজাতি, আকৃতি, স্বাদ, মানের কুল ও বড়ই পাওয়া যায়। পরিচিত এই ফলটিও ভিটামিন-সি’র অন্যতম একটি উৎস। সবচেয়ে বড় কথা হল, এই ফল থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন-সি ত্বকের স্বাস্থ্যে জন্য খুবই ভালো। পাশাপাশি টক ফল হওয়ায় ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখে কুল ও বড়ই। প্রতি ১০০ গ্রাম কুল ও বড়ই থেকে পাওয়া যাবে ৬৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি।
এক কাপ পরিমাণ পেঁপে থেকে পাওয়া যাবে ৮৭ মিলিগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন-সি, যা খুব সহজেই এই ফলটিকে ভিটামিন-সিয়ের অন্যতম দারুন একটি উৎস হিসেবে পরিচিত করে তুলেছে। শুধু পাকা পেঁপে নয়, কাঁচা পেঁপেও সমানভাবে ভিটামিন-সি’র জন্য পরিচিত। এতে উপকারি ভিটামিনের পাশাপাশি আরও রয়েছে ভিটামিন-এ, ফলেট, আশ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড।
সাইট্রাস বিভিন্ন ফলের মাঝে কমলালেবুকে এই তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে। ফ্রেশ কমলালেবু খাওয়া হল সরাসরি শরীরকে ভিটামিন-সি দেওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়। প্রতিদিন একটি বড় আকৃতির কমলালেবু খাওয়া হলেও ভিটামিন-সিয়ের চাহিদা অনেকখানি পূর্ণ হয়ে যাবে।
প্রচুর পরিমাণ অ্যানজাইম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনের সমন্বয় পাওয়া যাবে আনারস থেকে। এতে বেশ ভালো পরিমাণ ভিটামিন-সি পাওয়া যায়, যা পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও খাদ্য সঠিকভাবে পরিপাক করতে কাজ করে। এছাড়া এতে উপস্থিত বিশেষ এনজাইম ব্রোমালাইন পিরিয়ডকালীন সমস্যা কমাতেও কার্যকর।
বেদানা বা ডালিমকে বলা হয় অন্যতম স্বাস্থ্যকর ফল। বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করা ও প্রদাহ কমানোসহ ভিটামিন-সি যুক্ত মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি হতে পারে অন্যতম চমৎকার একটি খাদ্য উপাদান। প্রতি ১০০ গ্রাম বেদানা থেকে মিলবে ১০.২ মিলিগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন-সি।
বহু উপকারিতার আলমকি থেকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি পাওয়া যাবে একসাথে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও কাশির সমস্যা দূর করতে আমলকি চমৎকার। ছোট ও কিছুটা তিতকুটে স্বাদের এই ফলটিকে প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে রাখার অভ্যাস সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকার বয়ে আনতে কাজ করবে। প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকি থেকে পাওয়া যাবে ৪২.৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি।