নিজেকে ও পরিবারের সকলকে নিরাপদ ও সুস্থ রাখার জন্য নিজের বাসায় সঙ্গরোধে থাকা হল সবচেয়ে উত্তম সিদ্ধান্ত। মানুষের কাছ থেকে যত বেশি দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে, নিজেকে ততই সুস্থ রাখা যাবে। কিন্তু সঙ্গরোধে থাকাকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে প্রতিদিনের স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসের উপর, এমনটাই মনে করছেন গবেষকেরা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যালেন্স ইটিং ডিসঅর্ডার ট্রিটমেন্ট সেন্টারের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মেলাইনি রজার বলছেন, সবার মাঝেই উদ্বেগ বেড়ে গেছে। যার প্রভাব সরাসরিভাবে পড়বে স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে উপর।
আমাদের ভেতরে (মনে) যখন কোন সমস্যা কাজ করে, তখন নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ কমে যায়, কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর থেকে ফোকাস সরে যায় ও একাগ্রতা দুর্বল হয়ে যায়। যেমন শরীরচর্চা নিয়মিত থেকে অনিয়মিত হয়ে যায়। তেমনভাবে খাদ্যাভ্যাসেও বড়সড় পরিবর্তন চলে আসে। তবে এই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও অনিয়ম দেখা দেওয়া মানুষ ভেদে ভিন্ন হতে পারে বলেও জানান রজার।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন দেখা দেওয়ার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। ব্যাখ্যা করে রজার জানান, প্যানডেমিকের ফলে সামগ্রিকভাবেই সাধারণ খাদ্যাভ্যাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ এ সময়ে খাদ্য সংকট তৈরি হয় এবং সঠিক খাদ্য উপাদান পাওয়া কষ্টকর হয়।
এরপর আসে ভীতি, আতঙ্ক, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মাঝে যখন নেতিবাচক অনুভূতিগুলো বেশি কাজ করে, যেকোন খাবার খাওয়ার প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয় নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য। সামাজিভাবেও যে বিষয়টি সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে আসছে বহু আগে থেকেই।
এছাড়া সঙ্গরোধে থাকাকালীন সময়ে বিরক্তি ও একঘেয়ে ভাব কাটাতেও খাবার খাওয়াকে মানুষ বেশি পছন্দ করবে। কোন কিছু করতে ইচ্ছা না করলেও পছন্দের খাবার রান্না করা ও খাওয়া সবারই প্রিয় কাজ।
সবকিছু মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে নিয়মমাফিক ও স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা দেওয়া এ সময়ে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা বলে জানান রজার।
অতিরিক্ত খাওয়া, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, সময় মাফিক খাবার না খাওয়ার অভ্যাসগুলো থেকে দূরে থাকতে চাইলে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী ঘুমানো, শরীরচর্চা করা, রান্না করা ও যাবতীয় কাজ করার পরামর্শ দেন রজার।
তিনি জানান, অনিয়ম একটি চেইন রিয়্যাকশনের মতো। একটি অনিয়ম থেকে আরও তিনটি অনিয়ম দেখা দেয়। অন্য সকল কাজকে যদি নিয়মের মাঝে রাখা সম্ভব হয় তবে খাদ্যাভ্যাসকেও নিয়মের ভেতরে রাখা যাবে সহজেই।