করোনাভাইরাসের প্রভাবে বদলে গেছে জীবনযাত্রার ধরন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস রোধে নেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ। যার মাঝে সঙ্গরোধ (কোয়ারেন্টাইন), সেলফ-আইসোলেশন অন্যতম। এতে করে বাসার বাইরে বের হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
কিন্তু এর মাঝেও স্বল্প পরিসরে কিছু রেস্টুরেন্ট খোলা রয়েছে এবং সেখান থেকে খাবার ডেলিভারি নিচ্ছেন অনেকে। যার ফলে বাইরের মানুষের সাথে সংযোগের সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া যে খাবারটি ডেলিভারি নেওয়া হচ্ছে সেটা কী উপায়ে প্রস্তুত করা হয়েছে, কোথায় প্রস্তুত করা হয়েছে, কারা প্রস্তুত করেছেন, কীভাবে প্যাকেজিং করা হয়েছে- এমন যুক্তিযুক্ত বহু প্রশ্ন থেকেই যায়। এই সকল প্রশ্ন থেকে সহজ একটি প্রশ্নের জন্ম, সার্বিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে রেস্টুরেন্টের খাবার ডেলিভারি নেওয়া নিরাপদ কি?
এ বিষয়টি নিয়ে রিডার্স ডাইজেস্টের সাথে কথা বলেছেন সাউথ ক্যারোলিনার ক্লেমসন ইউনিভার্সিটির ফুড, নিউট্রিশন অ্যান্ড প্যাকেজিং সায়েন্সের প্রফেসর অ্যাঞ্জেলা এম. ফ্রাসের। তিনি বলছেন, ‘আমরা এখনও করোনাভাইরাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি এবং যে পরামর্শ দিব সেটা এখনও পর্যন্ত গবেষণা করে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তার উপর ভিত্তি করেই।’
মজার বিষয়টি হল, খাবার ডেলিভারি নেওয়ার প্রতি তিনি বিরূপ মনোভাব পোষণ করেননি এবং সম্পূর্ণরূপে নিরুৎসাহিতও করেননি। তবে এ বিষয়ে বেশ কিছু সচেতনতার প্রয়োজন আছে বলে তিনি জানান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, কোন খাবার যদি ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় রান্না করা হয়, তবে সেটা খাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। এই বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন অ্যাঞ্জেলা। যে খাবারটি অর্ডার করা হবে, সেটা উচ্চতামাত্রায় সম্পূর্ণভাবে রান্না করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে অবগত থাকতে হবে।
এদিকে নিউ জার্সির ফুড সায়েন্স অ্যান্ড মাইক্রোবিয়াল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এক্সপার্ট প্রফেরস ডোনাল্ড শেফনার জানাচ্ছেন, সঠিক সময় ও তাপমাত্রায় খাবার রান্না করা হলেও, এই খাবারটি তৈরি ও প্যাকেট করার সাথে যিনি জড়িত আছে তিনি নিরাপদ কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে মার্চ, ২০২০ এ প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্যানুসারে- বস্তু ভেদে সমতল স্থানের উপর করোনাভাইরাস ১-৩ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে। ডেলিভারি নেওয়া খাবার দেওয়া হয় কাগজের বাক্সে, প্যাকেটে কিংবা পলিথিনে। এই সকল জিনিসে করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কিনা সেটা জানার কোন উপায় নেই।
সকল দিক বিবেচনা করে যেকোন ধরনের বাইরের খাবার থেকে নিজেকে নিবৃত রাখাই সবচেয়ে নিরাপদ বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে।