সময় ও নদীর স্রোতকে কখনো ধরে রাখা যায় না। তেমনিভাবে বয়সকেও ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাহলে কেন বলা হচ্ছে বয়স ধরে রাখার কথা? ইংলিশে খুব সুন্দর একটি টার্ম আছে- Aging Gracefully. কথাটির অর্থ দাঁড়ায়, বয়স তার মত করে বাড়বে, কিন্তু বয়সের ছাপ ফেলবে না। সেজন্যই বলা হচ্ছে বয়স ধরে রাখার কথাটি। এটা মূলত পুরোটাই নির্ভর করে জীবনচর্চার ধরণ ও নিয়মের উপর। যার মাঝে খাদ্যাভ্যাসও রয়েছে। কিছু খাবার বয়সকে ধরে রাখতে তথা বয়সের ছাপকে প্রতিহত করতে কাজ করে। জানুন এমন কয়েকটি খাদ্য উপাদান সম্পর্কে।
গাজর থেকে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ বেটা ক্যারোটিন, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও ত্বকে বয়সের ছাপ রোধ করতে কাজ করে। ক্যালিফর্নিয়ার ডার্মাটোলজিস্ট সিনথিয়া বেইলি জানান, বেটা ক্যারোটিন হল এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা অ্যান্টি এইজিং উপাদান হিসেবে কাজ করে।
লাল চা কিংবা গ্রিন টি এক্ষেত্রে উপকারী পানীয় হিসেবে কাজ করবে। গবেষকেরা তাদের পরীক্ষা থেকে দেখেছেন, চায়ে উপস্থিত ফ্ল্যাভনয়েড সমূহ অস্টিওপরোসিস (হাড়জনিত সমস্যা) দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনে।
‘দ্য হেলদি মিল প্রেপ কুকবুক’ এর লেখিকা টবি অ্যামিডর জানান,তার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আঙ্গুর থাকবেই। কারণ মিষ্টি এই ফলটি থেকে পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল। যা মস্তিক, কোলন, চোখ ও হৃদস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। বয়স বৃদ্ধির সাথে এ সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সুস্থতার দিকে বাড়তি নজর দিতে চাইলে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে ৫-৬টি আঙ্গুর রাখা আবশ্যক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটিক্সের মুখপাত্র জিনজার হালটিন, আরডি বলছেন, আখরোট হচ্ছে অ্যান্টি এইজিং পুষ্টিতে ভরপুর একটি খাবার, যা সহজলভ্য ও সবখানে নিজের সাথে রাখা যায়। মূলত এই বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও আলফা-লাইনোলেনিক অ্যাসিড হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও ত্বকের জন্য উপকারী। পাশপাশি পরিমিত পরিমাণ বায়োটিন ত্বক ও নখের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
চিয়া সিডস একদিকে যেমন ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করবে,অন্যদিকে বয়সকেও বাড়তে বাধা দান করবে। দানাদার এই খাবারে থাকা উদ্ভিজ ওমেগা-৩, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে, হার্টবিট ঠিক রাখতে, মন ভালো রাখতে ও ত্বকের স্বাভাবিক টেক্সচার বজার রাখতে কাজ করবে।
ডিমকে যদি এই তালিকায় রাখা না হয়, তবে পুরো তালিকা তৈরিই ব্যর্থ হয়ে যাবে। ডায়েটেশিয়ান জেসিকা ক্র্যানডেল জানান, যাদের বয়স ৪০ ও তার বেশি হয়ে গেছে, প্রতিদিন একটি মুরগীর ডিম অবশ্যই খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। কারণ এ বয়স থেকেই পেশীর ভাঙ্গন শুরু হয়। ফলে এ সময়ে প্রোটিন খুবই প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান হিসেবে কাজ করে।