চিনি কখনোই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কোন উপাদান নয়। এমনকি চিনিকে সরল ভাষায় সাদা বিষ হিসেবেই বলা হয়। এরপরেও খাদ্যাভ্যাসের ধরণ ও অভ্যাস্ততার ফলে চিনি ও চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া হয়েই যায়। এছাড়া প্রতিদিনের চা-কফি পানের সময়েও প্রয়োজন হয় এক চামচ চিনি। সঙ্গে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত বিভিন্ন খাবার ও তাতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি।
তবে চেষ্টা করলে ও অভ্যাসকে ধরে রাখতে পারলে খাদ্যাভ্যাস থেকে চিনি ও চিনিযুক্ত খাবারকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া সম্ভব। জানুন চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করলে কী ধরণের উপকারিতা পাওয়া সম্ভব হবে।
চিনি গ্রহণে খুব সহজেই ইনস্যুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়। যা থেকে সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমের উপর প্রভাব পড়ে এবং এতে করে হার্টবিট স্বাভাবিকের চাইতে বেড়ে যায় অনেকখানি। চিনি গ্রহণ বন্ধ করলে হার্টবিট বেড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিবে না এবং সবার আগে এই উপকারিতাটি পাওয়া যাবে। এছাড়া চিনি পরিহারে কোলেস্টেরলের মাত্রা ১০ শতাংশ এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে। যা হৃদরোগ রোধ করতে খুব ভালো কাজ করে।
অনেকেই অভিযোগ করেন যে হুট করেই ওজন বেড়ে যায় আবার হুট করেই ওজন কমে যায়। ওজন বাড়াকমা কিংবা ফ্ল্যাকচুয়েট করার এই সমস্যাটির পেছনে দায়ী থাকে চিনি। চিনির ক্যালোরি ও ফ্যাট ওজনের উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে, যার ফলে ওজনের এমন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। চিনি গ্রহণ বন্ধ করার ফলে ওজন বাড়া-কমার পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে এবং স্থিতিশীল থাকে।
চিনি গ্রহণ বন্ধ করা হলে খাদ্য পরিপাক ক্রিয়ায় তুলনামূলক অনেকখানি উন্নতি দেখা দেবে। চিনি বাদ দেওয়ার সঙ্গে বাদ দিতে হবে প্রসেসড খাবারও, কারণ প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকে বেশ ভালো পরিমাণ চিনির উপস্থিতি। এমন খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হলেই পাকস্থলী অনেকখানি সুস্থ বোধ করবে এবং গ্রহণকৃত খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক করবে। এতে করে পেটের সমস্যা দেখা দেওয়া কমে যাবে অনেকাংশে।
খুব সহজ হিসাবে, চিনি গ্রহণে ব্রণের সমস্যা দেখা দিবেই। চিনি গ্রহণ বাদ দিয়ে দেওয়ার এক সপ্তাহের মাঝেই ত্বকের ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার ইনস্যুলিনের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়, যা ত্বকের সমস্যা তৈরি করে। যাদের ত্বকজনিত সমস্যা বেশি রয়েছে, খাদ্যাভ্যাস থেকে চিনি ও চিনিযুক্ত খাবার বাদ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
মিষ্টি জাতীয় খাবার ও চিনি গ্রহণের সবচেয়ে নেতিবাচক দিকটি হল, ঘনঘন মিষ্টি জাতীয় খাবারের ইচ্ছা বা ক্রেভিং দেখা দেওয়া। মিষ্টি খাবারে অভ্যস্ততা চলে আসলে সময়ে সময়ে মিষ্টি খাবার খাওয়া না হলে তার প্রতি প্রচন্ড আকর্ষণ তৈরি হয়। ফলস্বরূপ বেড়ে যায় ওজন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চিনি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পারলে এই সমস্যাটি কেটে যাবে সহজেই।