না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ময়মনসিংহ অঞ্চল তথা বাংলাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত সাধক, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এক উজ্জল নক্ষত্র ওস্তাদ সুনীল কুমার ধর।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে বার্ধক্যজনিত কারণে ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য অনুসারী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ময়মনসিংহ জেলা শিল্পকলা একাডেমির নির্বাহী সদস্য সারওয়ার জাহান বার্তা২৪.কমকে জানান, ওস্তাদ সুনীল ধর ছিলেন সঙ্গীত অঙ্গনে একটি বটবৃক্ষের মত। বিশেষ করে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে ময়মনসিংহ অঞ্চলে তিনি ছিলেন একজন পথিকৃৎ, ধারক এবং বাহক। শুদ্ধভাবে নজরুল সঙ্গীতের চর্চা, প্রচার এবং প্রসারের জন্য নিবেদিত সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন ওস্তাদ সুনীল কুমার ধর। সেজন্য তিনি ১৯৬২ সালে ময়মনসিংহ শহরে প্রতিষ্ঠা করেন ময়মনসিংহ একাডেমি অব ফাইন আর্টস (মাফা)। যা ১৯৬৯ সালে নজরুল একাডেমি হিসেবে নামকরণ করা হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সারওয়ার জাহান আরো জানান, জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান ধ্রুব পরিষদের ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি ছিলেন ওস্তাদ সুনীল ধর। তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কয়েক যুগ তিনি প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ময়মনসিংহ ক্যাডেট কলেজ, টাঙ্গাইল সিটিসিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সঙ্গীত প্রশিক্ষক হিসেবে প্রশংসার সাথে কাজ করেছেন তিনি।
গুণী এ সংঙ্গীত সাধক কর্মজীবনে সঙ্গীতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ধ্রুব পরিষদ ও জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক সম্মাননা প্রাপ্ত হয়েছেন। সারাদেশে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীসহ অগণিত অনুসারী ও শিক্ষার্থী রয়েছে দেশবরেণ্য এই গুণী সঙ্গীত প্রশিক্ষকের। তার মৃত্যুতে ময়মনসিংহ অঞ্চলের সঙ্গীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৩৩ সালের ২৮ মার্চ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ওস্তাদ সুনীল কুমার ধর। পরবর্তীতে সপরিবারে ময়মনসিংহ শহরের আঠারবাড়ি এলাকায় বাস করতেন তিনি।