সিলেটে তালিকা হচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের টিম লিডার ও পৃষ্টপোষকদের

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2024-05-23 22:22:00

সিলেটে নগরীতে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় চালাচ্ছে বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম। তাদের অপকর্মে নগরীর বাসিন্দারা অনেকটা অসহায়। তবে এবার কিশোর গ্যাংয়ের অপতৎপরতা থামাতে টিম লিডার ও তাদের পৃষ্টপোষকের তালিকা তৈরি করতে সিলেট নগরীর ৬ থানার ওসিদের নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মো.জাকির হোসেন খান, পিপিএম।

সম্প্রতি এসএমপি সদর দপ্তর সম্মেলন কক্ষে কিশোর গ্যাং সংক্রান্তে আলোচনা সভায় এই নির্দেশনা দেয়া হয়।

এর আগে গত ১৮ মে সিলেট নগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের অপতৎপরতার বিষয়টি আইজিপি’র (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ) নজরে নিয়ে আসেন সিলেট বিশিষ্টজনেরা। বিশিষ্টজনেরা বলেন, সিলেটে কিশোর গ্যাং সদস্যরা নানামুখী অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের কারণে সরকারি বিভিন্ন অর্জনও ম্লান হতে চলেছে। কাজেই, তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের এখনই মোক্ষম সময়।

জবাবে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আইজিপি আব্দুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার) পিপিএম বলেন, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। আপনার সন্তান কার সাথে মিশছে এবং নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে কী না-সেদিকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে।

জানা যায়, সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার, নাগরী চত্বর, দরগাহ গেইট, সুবিদবাজার, শিবগঞ্জ লাকড়িপাড়া মায়া টাওয়ার সংলগ্ন এলাকা, মনোয়ার সিএনজি পাম্পের সামনে, লামাবাজার, মির্জাজাঙ্গল, কুয়ারপার, ওসমানী মেডিকেল রোড, বাগবাড়ি, শামীমাবাদ, উপশহর ডি ব্লক ৩১নং রোডসহ বিভিন্ন এলাকা কিশোর গ্যাং সদস্যদের তৎপরতা দেখা যায়। ওই এলাকাগুলোতে কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডা বসে এবং ছিনতাই থেকে শুরু করে সব ধরণের অপরাধের সাথে জড়াচ্ছে।

গত ৩মে আধিপত্য নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হয়েছের কিশোর মোহাম্মদ আলী নিশো। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানাধীন দত্তগ্রাম থেকে কিশোর গ্যাংয়ের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন-শান্তিগঞ্জ উপজেলার জামলাবাজ গ্রামের চাঁন মিয়ার পুত্র ফরহাদ মিয়া (২০), কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার মজলিশপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেল নূরনবী নুনু (১৯) ও একই থানার নোয়াহাটা গ্রামের নুর জামাল মিয়ার ছেলে রাহিম আহমদ (১৯) এবং হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার বগি গ্রামের জাকারিয়া মিয়ার ছেলে সাকিব আহমদ (১৯)। তারা সবাই ছড়ারপারের বিভিন্ন কলোনিতে থাকতেন। এদের মধ্যে ফরহাদ এ মামলার মূল আসামী।

এদিকে, মঙ্গলবার (২১মে) সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ কমিশনার মো.জাকির হোসেন খান, পিপিএম’র সভাপতিত্বে কিশোর গ্যাং সংক্রান্তে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় পুলিশ কমিশনার সকল থানার অফিসার ইনচার্জদের থানা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হালনাগাদ তালিকা ও তথ্যাদি প্রণয়ন করা, কিশোর গ্যাংয়ের নাম, তাদের লিডারদের নাম এবং পৃষ্টপোষকের নামের তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন।

কিশোরগ্যাং সংক্রান্তে নিয়মিত চিঠি প্রেরণ, মিটিং করতে ও কোথায় মিটিং হয় তার ছবি প্রেরণের করতে বলেন পুলিশ কমিশনার। স্থানীয় পত্রিকাতে কিশোর গ্যাং সংক্রান্তে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিশেষ করে শাহপরাণে কিশোর গ্যাং চিহ্নিত করতে ওসি শাহপরাণকে নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়াও নগরীর যেসকল স্থানে কিশোর গ্যাং কর্তৃক অপকর্ম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সে সমস্ত স্থানে পুলিশের নজরধারী বাড়ানোর জন্য সকল থানার ওসিদেরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর