পাগলের বেশ ধরেছে কনস্টেবল কাউসার, কুলুপ এঁটেছেন মুখে

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-06-09 13:06:05

রাজধানীর গুলশানে বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে ডিউটিরত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কাউসার আলী নামে অপর এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে গ্রেফতারকৃত ঘাতক পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মুখ খুলছেন না কনস্টেবল কাউসার। পাগলের বেশ ধরে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বলে জানিয়েছেন গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম।

রোববার (৯ জুন) সকালে বার্তা২৪.কমকে এ তথ্য জানান তিনি।

রিফাত রহমান শামীম বলেন, ঘাতক কনস্টেবল কাউসার দীর্ঘদিন পুলিশে কর্মরত। রাতেই তাকে নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেয়া হয়। তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, কিন্তু মুখ খুলছেন না কনস্টেবল কাউসার।

তিনি বলেন, পাগলের বেশ ধরেছেন কাউসার। ঘটনা স্পর্শকাতর গুরতর ঘটনা। এই অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে জানে কনস্টেবল কাউসার। সঙ্গতঃ কারণে তিনি পাগলের বেশ ধরতে পারেন। মুখে কুলুপ এঁটেছেন, অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে্ন না। 

কনস্টেবল কাউসার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা ভারসাম্যহীন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি রিফাত বলেন, পাগল প্রমাণ করতে পারলে সে মামলায় সুবিধা পেতে পারে। সেটা জেনে-বুঝেই হয়তো পাগলের বেশ ধরেছে। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তারপর বলা সম্ভব, ঘটনার আসল মোটিভ। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা করবেন নিহত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের বড় ভাই। তিনি ঘটনা শুনে রাতেই গুলশান আসেন। তিনিও পুলিশে চাকরি করেন। তিনি মামলার বাদী হবেন। মামলা নথিভুক্ত হবার পর আটক কনস্টেবল কাউসারকে আদালতে পাঠানো হবে।

এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশান-বারিধারার কূটনীতিক এলাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে পুলিশ সদস্যের গুলিতে নিহত হন কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই ঘটনায় আরেকজন পথচারী আহত হয়েছেন। তবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

ঘটনার খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। মোতায়েন করা হয় সোয়া টিম। পরে রাত পৌনে ২টার দিকে ঘাতক কনস্টেবলকে হেফাজতে নেয় গুলশান থানা-পুলিশ।

ঘটনার পর দিবাগত রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

সে সময় তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের লোক ছিল, ঘটনা যে ঘটিয়েছে সেও আমাদের লোক। আসলে ঘটনাটা কি কারণে ঘটেছে সেটা আমরা জানার চেষ্টা করছি।

এদিকে ঘাতক কাউসার সম্পর্কে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে কাউসার আলী মানিসকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। গত ৫ থেকে ৬ দিন ধরে তিনি কারও সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলতেন না। বলতে গেলে গত ৫ থেকে ৬ দিন ধরে তিনি চুপচাপ ছিলেন, কারো সঙ্গে কথা বলতেন না। ঘটনা ঘটিয়েও ভারসাম্যহীন আচরণ করেন।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করার পর কাউসার আলী ঘটনাস্থলে আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। কিছু সময় তিনি দূতাবাসের সামনে বসেছিলেন। তার ঘোরাফেরা ও আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

ঘটনার পর রাতেই ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশার আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, আমাদের প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলেন। প্রাথমিকভাবে আমরা আক্রমণকারী পুলিশ সদস্যের ব্যাপারে যতটুকু জেনেছি সে পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। তার অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না। তার ব্যাচমেটদের সঙ্গে কথা বলে এসব জেনেছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর