রাজধানী থেকে আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্য গ্রেফতার

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2024-07-03 18:07:23

রাজধানীর মহাখালী থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. মামুন হোসেন, আবু বক্কর ও হাসিবুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি ল্যাপটপ ও ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

বুধবার (৩ জুলাই) বার্তা ২৪.কমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে, সিটিটিসি সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা স্বীকার করেছেন যে, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন 'আনসার আল ইসলাম'-এর সক্রিয় সদস্য।

গ্রেফতার মো. মামুন হোসেন জানান, তিনি অনলাইনে মুফতি জসিমউদ্দিন রহমানী ও তামিম আল আদনানির বক্তব্য শুনে উগ্রবাদের দিকে আকৃষ্ট হন। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্ন আইডির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম’ সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করেন।

সংগঠনের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে ওসমান ও আবু কায়সার ওরফে রনির সঙ্গে মামুনের অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। রনি মামুনকে জানান, ‘পটাশিয়াম নাইট্রেট’ দিয়ে বিস্ফোরক বা বোমা বানানো যায়। সেইসঙ্গে আলীবাবা ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করার জন্যও মামুনকে নির্দেশনা প্রদান করেন। নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে একত্রিত হলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে এবং নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়।

এ সংক্রান্তে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ২০১৯ সালে গেণ্ডারিয়া থানায় একটি মামলা রুজু হয়।

এ ঘটনার সহযোগী নাহিদ ফেরদাউস, মালয়েশিয়ায় এবং জ্যাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় তখন তাদের চিহ্নিত কিংবা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

সে ঘটনার পর মামুন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে বন্দি আবু বক্করের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। মামুন আবু বক্করকে সংগঠনের নাহিদ ফেরদাউসের বিষয়ে বলে এবং নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দেন।

আবু বক্কর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে অনলাইনে নাহিদ ফেরদাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের জন্য বিদেশ থেকে আবু বক্করের কাছে নিয়মিত অর্থ পাঠান।

আবু বক্কর সে অর্থ সংগঠনের কাজে ব্যবহার করেন। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের গুরুত্বপুর্ণ সদস্য জ্যাকের সঙ্গে আবু বক্করকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং জ্যাক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে বলে জানান। জ্যাক আনসার আল ইসলাম সংগঠনে নিয়মিত অর্থায়ন করেন বলেও জানান তিনি।

সিটিটিসি সূত্র আরো জানায়, পরবর্তীতে গ্রেফতার আবু বক্কর অপর গ্রেফতার হাসিবুল ইসলামকে আনসার আল ইসলামের দাওয়াত দেন এবং নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

হাসিবুল ইসলাম নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন। জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর আড়ালে আনসার আল ইসলাম সংগঠনের সদস্যদের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এবং দেশে আনসার আল ইসলামের নেটওয়ার্ক স্থাপন করেন। বিদেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশে নাশকতার পরিকল্পনা করেন।

সূত্র আরো জানায়, গ্রেফতাররা তাদের পলাতক সহযোগীদের নিয়ে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার নিমিত্তে সরকার ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও ক্ষতিসাধনের ষড়যন্ত্র করেন। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডেরর পরিকল্পনা করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে মিলিত হন।

তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর