‘তিস্তায় পানি বাড়লে রাতে ঘুমাতে পারি না’

, জাতীয়

লেলিন আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী | 2024-09-28 20:36:26

‘তিস্তায় পানি বাড়লে আমাদের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। রাতে অনেক সময়ে ঘুমের মধ্যে থাকি, তখন পানি এসে ঘরে ঢোকে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকা খওয়ার কষ্ট হয়। তিস্তায় পানি বাড়লেই রাতে ঘুমাতে পারি না, আতঙ্কে থাকতে হয়’- এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারীর ডিমলা কিসামত চরের কৃষক রফিকুল ইসলাম। 

উজানের ঢল ও টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। ইতোমধ্যে পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টার তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টের সর্বশেষ তথ্যঅনুযায়ী ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার যা বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার দিয়ে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বাড়ায় ডিমলা উপজেলার তিস্তাপারের চর ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তাতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি চরের বাসিন্দারা। ডুবে গেছে বোরো ফসলের খেত।

টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। ছবি: বার্তা২৪.কম


এদিকে টানা বৃষ্টিপাতে পানি বাড়ার ফলে উপজেলার সব নদ-নদীর পানির পাশাপাশি বিলের পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত আছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। সেই সঙ্গে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি, বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।

কৃষক রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আজ ভোর থেকে বাড়িঘরে নদীর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় চরের অনেক পরিবার তাদের মালপত্র সরিয়ে নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিবছর তিস্তায় পানি উঠে এতে করে আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অনেক সময়ে আমাদের বাড়ির তিস্তার ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে যায়। বন্যা দেখা দিলে আমরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নেই।

ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী বলেন, পানি বাড়ায় তিস্তাপারের মানুষ বন্যার আশঙ্কায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। তার ইউনিয়নের তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। অনেক ফসলের খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

ডালিয়া পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাশেদীন বলেন, উজানের ঢল আর বর্ষণে তিস্তায় পানির প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও পানি ছুঁইছুঁই করছে। যেকোনো সময় পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর