‘আমি তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে পারব’

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 07:38:38

দেশের প্রথম অ্যাক্সেস কন্ট্রোল্ড ননস্টপ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ সড়ক দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ যাতায়াত করতে পারবে। সবচেয়ে বড় কথা, আমি তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে পারব বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন,  আমার খুব ইচ্ছা ছিল নিজে গিয়ে উদ্বোধন করার, কিন্তু পারলাম না। তবে খুব শ্রীঘই যাব। এক মাসের মধ্যেই যেতে পারি। এটি প্রথম অ্যাক্সেস কন্ট্রোল্ড ননস্টপ এক্সপ্রেসওয়ে। এ এক্সপ্রেসওয়েতে কোনো ট্রাফিক ক্রসিং নেই, এখানে যানবাহনগুলো বিরতিহীনভাবে চলবে।

বৃহস্পিতবার (১২ মার্চ) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা আট লেনের এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন করেন। ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়ক দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে।

তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সব সময় অবহেলিত ছিল। দীর্ঘ ভোগান্তি নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যেতে হত। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এখন দ্রুত ও সহজে যাতায়াত করতে পারবে। আমিও তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে পারব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই সড়কগুলো উদ্বোধনের ফলে মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।

এসব ব্রিজগুলো যেন যত্ন সহকারে ব্যবহার করা হয় এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি। 

অ্যাক্সেস কন্ট্রোল্ড হাইওয়ে হলো উচ্চ গতির যানবাহনের জন্য ডিজাইন করা হাইওয়ে। যাতে সমস্ত যানবাহনের প্রবেশ ও বহির্গমন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকে।

দেশের ইতিহাসে প্রথম ৮ লেন সড়ক এটি। সড়কে ৪ লেনের মূল এক্সপ্রেসওয়ে এবং ধীরগতির যানবাহনের জন্য উভয়মুখী চার লেনের সার্ভিস রোড থাকবে। এর ফলে ঢাকা থেকে মাওয়া যাওয়া যাবে মাত্র ২৭ মিনিটেই।

২০১৬ সালের মে মাসে ৬ হাজার ৮৫২ কোটি ৯২ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০২০ সালের জুন মাস। নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হলো কাজ। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এ সড়কের সার্বিক কাজ করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কন্সট্রাকশন ব্রিগেড।

ননস্টপ এক্সপ্রেসওয়ে, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠােন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে, দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে তার একটা উদাহরণ। ইউরোপে অনেক দৃষ্টিনন্দন সড়ক দেখা যায়। আমাদের এ এক্সপ্রেসওয়েটিও ইউরোপের সড়কগুলোর মত দৃষ্টিনন্দন সড়ক। এ সড়ক ইউরোপের অনেক সড়ককে হার মানাবে।

এ এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে মাত্র ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে মাওয়া পৌঁছা যাবে। পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হয়ে গেলে মাত্র ৪৫ মিনিটে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যাওয়া যাবে, বলেন সেতুমন্ত্রী।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এসময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম প্রকল্প বিষয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন তথ্য চিত্র তুলে ধরেন।

এ এক্সেপ্রেসওয়ের মধ্যে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পর্যন্ত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার বহুমুখী পদ্মা সেতু অবস্থিত। এক্সেপ্রেসওয়ে হয়ে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ৪২ মিনিটে পৌঁছানো যাবে ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। এ প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কে সেতু থাকছে ২৫টি (পিসি গার্ডার ২০টি ও আরসিসি ১১টি), বড় সেতু ধলেশ্বরী-১, ধলেশ্বরী-২ এবং আড়িয়াল খাঁ এবং ৪৫টি কালভার্ট, ৩টি ফ্লাইওভার, গ্রেট সেপারেটর হিসেবে ১৫টি আন্ডারপাস ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া এবং ভাঙ্গায় ২টি ইন্টারচেঞ্চ এবং ৪টি রেলওয়ে ওভারপাস রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর