নভেম্বরে দেখা যাবে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

ঢাকা, জাতীয়

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-27 13:50:44

ঢাকা: যানজটে শহর জুড়ে যেখানে গাড়ি থমকে আছে সেখানে ৮০ কিলোমিটার গতিতে সাঁই সাঁই করে চলবে গাড়ি। এমন সড়ক পথ নির্মাণ যজ্ঞের মাঝামাঝিতে এখন বাংলাদেশ। ঢাকার বিমানবন্দর সড়ক ঘেঁষে স্বপ্নের এই এক্সপ্রেসওয়ের একের পর এক পিলার দাঁড়িয়ে গেছে। পিলারের ওপর গার্ডার তোলার জন্য চলছে প্রস্তুতি। দেশের প্রথম এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ধরে দিনে এক লাখ যানবাহন পার হবে।

রাজধানীর ৩১ টি স্থান থেকে গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে ওঠা নামা করার র‌্যাম্প থাকবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক কাজী ফেরদৌস আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

সব ঠিক থাকলে অক্টোবরে স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হবে, ফলে নভেম্বরে দৃশ্যমান হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে- জানান প্রকল্প পরিচালক।

প্রাইভেট কার থেকে শুরু করে সব ধরনের গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত টোল দিয়ে চলাচল করবে পরিবহন। কোন ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়াই মিনিট বিশেকে বিমানবন্দর থেকে মগবাজার কমলাপুর নামা এবং আধঘণ্টায় গিয়ে নামা যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের যাত্রবাড়ি অংশের কুতুবখালিতে।

প্রকল্পের মগবাজার পর্যন্ত অংশ গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে ২০২০ সালের অক্টোবরে। ২০ কিলোমিটার শেষে যাত্রাবাড়ির ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে গিয়ে শেষ হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘ এটি চালু  হলে ঢাকার ৩০ ভাগ গাড়ি চার-লেন প্রশস্ত এ এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুযোগ পাবে। মূল সড়কে তখন চাপ অনেকটাই কমে যাবে।

তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, বিমানবন্দর সামনে থেকে শুরু হয়ে কুড়িল বনানী ফ্লা্ওভারের ওপর দিয়ে যাবে এক্সপ্রেসওয়ে। এরপর বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার পযন্ত পুরো পথ রেললাইনের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। মগবাজার থেকে কমলাপুর পযন্ত বেশির ভাগ অংশ পড়েছে রেললাইনের ওপর। এরপর হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালিতে গিয়ে শেষ হবে।

কাজী ফেরদৌস বলেন, প্রায় ২০ কিলোমিটার লম্বা এই এক্সপ্রেসওয়ের উঠানামা করার ৩১ টি র‌্যাম্প হবে। মাটি থেকে কোথাও কোথাও ৬০ ফুট উঁচু দিয়ে চলবে এক্সপ্রেসওয়ে।

দেখা গেছে, বিমানবন্দর সড়কে পাশে কাউলায় এক্সপ্রেসওয়ের পিলার তোলে ক্রস গার্ডার বসানো হয়েছে। কাউলা মোড়ের পাশে রয়েছে এক্সপ্রেসওয়ের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড। যেখানে ১৫০টি আই গার্ডার নির্মাণ করে রাখা। ক্রস গার্ডারের ওপর আই গার্ডার বসলেই ডেক হয়ে যাবে। যার ওপর নির্মাণ হবে সড়ক।

কাজী ফেরদৌস বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব নির্মাণ আছে সেগুলো বসিয়ে দিলে ১৫ টি স্প্যান হয়ে যাবে। প্রতিদিন একটি করে স্প্যান বসানো হবে। অক্টোবরের শেষ দিক থেকে স্প্যান বসানোর কাজ শুরু করা হবে। এর ফলে নভেম্বরে পদ্মাসেতুর মতো এলিভটেড এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হয়ে উঠবে বলে- আশা করছেন পদ্মাসেতুর সাবেক এই প্রকল্প পরিচালক। 

নির্মাণ শুরুর পর বার বার ঝুলেছিলো এই প্রকল্প। ৭ বছরে অগ্রগতি ছিলো ১০ শতাংশের কম। এর কারণ হিসেবে জমি অধিগ্রহণে সমস্যা এবং ‘ফান্ডিং ক্রাইসিস’ উল্লেখ করেন প্রকল্প পরিচালক।

তবে এখন আর কোন সমস্যা নেই। ফান্ডিং সম্পূর্ণ হওয়ার দিকে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পুরো এলিভেটেড এক্সপ্রেওয়ে শেষ হবে। প্রায় ১০০ বছরের স্থায়ীত্ব থাকবে এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। নির্মাণ কালের সাড়ে ৩ বছর সহ ২৫ বছর বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থাইল্যান্ডের ইটাল থাই এখান থেকে টোল আদায় করবে।  

পিপিপি ভিত্তিতে এটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। প্রাইভেটকারের মতো হালকা যানে ১০০ এবং ভারি যানে ৪০০ টাকা টোল হবে। দুই চাকার মোটরসাইকল বা তিনচাকার গাড়িকে এটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।

গাড়ি গতিতে থাকলে কোন কারণে থামার প্রয়োজন হলে কিছুদূর পর পর সার্ভিস লেন রাখা হবে।  

এ সম্পর্কিত আরও খবর