উয়েফা ইউরোর চলতি আসরে শুক্রবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল পর্তুগাল ও ফ্রান্স। যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেও পুরো ১২০ মিনিট গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই। শেষে টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা, সেখানে ৫-৩ ব্যবধানে জয় তুলে নেয় ফ্রান্স। এতে স্বপ্নভঙ্গ হয় পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর, একইসাথে বিশ্বজুড়ে পর্তুগাল সমর্থকদের।
বিদায় বেলায় সবচাইতে কাছের বন্ধু রোনালদোকে জড়িয়ে ধরে আরেক অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার পেপের কান্না করার দৃশ্যটা আবেগাপ্লুত করেছে প্রায় সব ফুটবল ভক্তদেরই। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নিজের শেষ ম্যাচটায় হতাশা নিয়েই বিদায় নিতে হলো পেপেকে।
ইউরো থেকে পর্তুগালের বিদায়ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকেও বিদায় নিয়ে ফেললেন এই কিংবদন্তি ডিফেন্ডার। বুকে জড়িয়ে বন্ধু রোনালদো তাকে কি বলে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন সেটি জানা যায়নি। রোনালদো বলেন, ‘এসব আমি প্রকাশ্যে বলবো না। এতটুকু বলতে পারি, আমরা এই দুঃখ গভীরভাবে অনুভব করছি। লোকে যেমনই ভাবুক, আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে।’
সময়ের অন্যতম সেরা একজন ডিফেন্ডার ছিলেন পেপে। জাতীয় দল কিংবা ক্লাব ফুটবল, যেখানেই মাঠে নেমেছেন নিজের দাপট দেখিয়েছেন। শেষ অব্দি লড়াই করার মানসিকতা, ডিফেন্স লাইনে দুর্গ গড়ে তোলা, দলের প্রতি আত্মত্যাগ, মাঠে নিজের সবটা উজাড় করে দেয়া, দলের প্রতি নিবেদন; এই সবকিছু মিলিয়ে পেপে আদর্শ হয়ে থাকবেন পর্তুগিজ ফুটবলের ইতিহাসে।
বিদায় বেলায় দলের হেডকোচ রবার্তো মার্তিনেজও পেপেকে নিয়ে বললেন, ‘সে এই টুর্নামেন্টে যা দেখিয়েছে, ফুটবলার হিসেবে এটাই তার পরিচয়। কেবল ম্যাচেই নয়, ট্রেনিং সেশনগুলোতে সে যেভাবে কাজ করেছে, যেভাবে সতীর্থদের পাশে থাকে, যেভাবে নিবেদন দেখায়, সব কিছু মিলিয়েই। পর্তুগিজ ফুটবলে সে একজন আইডল। নিজেকে টুর্নামেন্টজুড়ে যেভাবে মেলে ধরেছে তা আমাদের সঙ্গে সবসময় রয়ে যাবে, পরবর্তী প্রজন্মের সামনে উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
ফ্রান্সের বিপক্ষে এই পরাজয় মেনে নিতে কষ্ট হয়েছে মিস্টার সিআরসেভেনেরও। তবে এবার তিনি কাঁদেননি, হতাশায় যেন শক্ত হয়ে গিয়েছিলেন এই মহাতারকা। খুব সম্ভবত জাতীয় দলের জার্সিতে শেষবার মাঠে নামা হয়ে গেছে তারও। তবুও পর্তুগাল এবং তার সমর্থকরা আশা করেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে শেষবার মাঠে নেমে নিজের ঝলক দেখাবেন রোনালদো।