মিথ্যাচার সরকারের এখন সবচেয়ে বড় অস্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী।
শনিবার (২০ জানুয়ারি. ২০২৪) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে আয়োজিত এক গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জোনায়েদ সাকী বলেন, মিথ্যাচার সরকারের এখন সবচেয়ে বড় অস্ত্র। এই মিথ্যার মাধ্যমে তারা (সরকার) গণমাধ্যমে দেখাচ্ছে যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এই ডামি নির্বাচনকে তারা (সরকার) বারবার সুষ্ঠু নির্বাচন বানানোর চেষ্টা করছে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কটাক্ষ করে সাকী বলেন, ‘৭ তারিখের নির্বাচন হচ্ছে, পারিবারিক নির্বাচন। তারা (সরকার) বলেছিল, এই ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচনকে সুষ্ঠু করা হবে। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই। মারামারি, সংঘাত হয়েছে। ভোটের মাঠগুলো ছিল বিরানভূমি, মানুষের লাইন আমরা দেখিনি। তাহলে এই ৪১ শতাংশ আসলো কোথা থেকে? যারা বলছে আমরা এক থেকে দেড় লাখ ভোট পেয়েছি, তারা তাদের ভোটকেন্দ্রের ভিডিও ফুটেজ আমাদের দেখায় না কেন’!
তিনি বলেন, ‘মূল ঘটনা হচ্ছে, এই ২-৩ শতাংশ ভোটকে অনেক বেশি দেখানোর জন্য ব্যালটে তারা (আ.লীগ) নিজেদের মতো করে সিল মেরেছেন’।
জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ৭ জানুয়ারি মতো এত সুষ্ঠু নির্বাচন নাকি আর হয়নি। এটা নাকি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আসলে কোন অক্ষরে লেখা থাকবে, এটা জনগণই নির্ধারণ করে দেবে’।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চলমান থাকবে। যতদিন পর্যন্ত এই স্বৈরাচার সরকারের সাথে আমাদের বোঝাপড়া না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা মানুষের কাছে যাবো; এই গণস্বাক্ষর হলো, তাদের কাছে যাওয়ার একটা মাধ্যম।
তিনি আরো বলেন, যারা লুটপাট করছে, তাদের পক্ষে আছে এ বর্তমান সরকার। এ সরকার জনগণের সরকার নয়। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। এ সরকার জনগণের জান-মালের কোনো তোয়াক্কা করে না। ৭ তারিখে ফোরটোয়েন্টি নির্বাচনের পর থেকে আজকে পর্যন্ত মোট দুই সপ্তাহ হয়েছে কিন্তু দেশে কোনো জিনিসপত্রের দাম কমেনি।
গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।
বরগুনার আমতলীতে চলাচলের কাঁচা রাস্তার মাটি কেটে স্থানীয় প্রভাবশালী ইনজামাল আকন ইটভাটায় বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার(২৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে আমতলী উপজেলার রায়বালা গ্রামে ঘটনা ঘটে। রাস্তা কেটে ফেলায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত ইনজামাল আকনের শাস্তি দাবী করেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, উপজেলার রায়বালা গ্রামের ফজলুল করিম আলনের ছেলে ইনজামাল আকন ওই গ্রামের চলাচলের রাস্তার মাটিসহ নিজের জমি ইটভাটার মালিক নুর জামালের কাছে বিক্রি করেন।
এদিকে কেনা জমির সাথে রাস্তার মাটিও কেটে ফেললে,স্থানীয়রা আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাজমুল ইসলামকে অবহিত করেন। তিনি ভূমি অফিসের তহসিলদার মোঃ জাফর মিয়াকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে রাস্তার মাটি কাটা বন্ধ করে দেন।
রায়বালা এলাকার জলিল মৃধা বলেন, ‘ইনজামাল তার রেকর্ড জমির মাটির সাথে রাস্তার মাটি ইটভাটায় বিক্রি করে দিয়েছেন। ইটভাটার লোকজন এসে রাস্তার মাটি কেটে নিয়ে গেছে।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ‘ইনজামাল আকন রাস্তার মাটি কাটতে ফিতা দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ভেকো মেশিন দিয়ে রাস্তার অন্তত ৫ মিটার প্রস্থ ও ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের মাটি কাটা হয়ে গেছে।
প্রভাবশালী ইনজামাল আকন মাটি বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার রেকর্ড জমির সাথে কিছু রাস্তার মাটি কাটা হয়েছে। এ রাস্তা মাটি দিয়ে বেঁধে দেব।’
ইটভাটার মালিক মোঃ সবুজ মিয়া বলেন, জমির মালিক যেভাবে জমি মেপে মাটি কাটতে বলেছে আমরা সেই ভাবে মাটি কেটে এনেছি।
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তহসিলদার পাঠিয়ে রাস্তার মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। তহসিলদারের প্রতিবেদন সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের ইতিহাস , সংস্কৃতি ও বন্ধুত্ব দুই দেশের সীমানার মতোই কাছের। এই বন্ধন, বিশ্বাস, ভ্রাতৃত্ব আরও সুদৃঢ় করতে সংস্কৃতির আদান-প্রদানে ২০১২ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ইচ্ছায় শুরু হয় 'বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া'।
এই আয়োজনের আওতায় প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন অঙ্গনের ১০০ জন তরুণ-তরুণীকে ভারত সফরে নিয়ে যায় ঢাকা ভারতীয় হাইকমিশন। ভারতের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সপ্তমবারের মতো বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বরাবরের মতোই দীর্ঘ বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শত শত তরুণ-তরুণীর মধ্য থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ইশরাত। বলা হচ্ছে, ভারতের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যুবশ্রেণী। বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যাচ্ছেন, তারাও যুবশ্রেণীর। বিভিন্ন অঙ্গনের এই তরুণ-তরুণীরাই আগামীতে নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশকে।
তাদের মধ্যে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র ইশরাত বিনতে রউফ। ইশরাত এর স্কুল ও কলেজ ছিল দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ। এস এস সি ও এইচ এস সি তে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করে ইশরাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন।
তার অভাবনীয় একাডেমিক ফলাফল শিক্ষক ছাত্র সমাজের কাছে পরিচিত করে তোলার পাশাপাশি, এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রম ও তার অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে। নিজ ডিপার্টমেন্ট এর একজন টপার হিসেবে মাস্টার্স শেষ করার পর তিনি আরো সাফল্য অর্জন করেন। পরবর্তীতে পৃথিবী বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল ম্যাডাম এর একজন মডেল হিসেবে পরিগণিত হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি বিভিন্ন ভলান্টারি কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। ইউ এস এইড এর নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনফারেন্স এ তিনি ওয়ার্কশপ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন। নিজ ডিপার্টমেন্ট থেকে ইউ এস এইড এর আউটরিচ প্রোগ্রামেও তিনি যোগদান করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
ইশরাত বিনতে রউফ তার কাজের পাশাপাশি লেগে পড়েন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে . আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জে সি আই এ তিনি পর্যায়ক্রমে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সেক্রেটারি জেনেরাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি একটি ন্যাশনাল ইয়ুথ লেড সংস্থা- জেন ল্যাব এর সাথে কাজ করছেন।
ইউ এন ডি পির প্রকল্প সমূহতে ইশরাত সুযোগ পান কক্সবাজারের শুকনাছড়ি তে একটি স্কুল পরিদর্শনের, যেখানে প্রায় চল্লিশ শতাংশ শিক্ষার্থী রোহিঙ্গা শিশু। শিশুদের সাথে কথা বলে, সময় কাটিয়ে তিনি জানান, কোমলমতি শিশু ও তাদের পরিবারের এমন দুর্দশা দেখলে অনুধাবন আসে যে আমাদের জীবনে যাই প্রাপ্তি তা অ্যাপ্রিশিয়েট করতে জানতে হবে।
সম্প্রতি ইশরাত ওমেন চ্যাপ্টার নামক ব্লগ সাইটে লেখা শুরু করেছেন। তার প্রথম আর্টিকেলটি হলো, ‘Moral policing: Breaching constitutional rights’.
কাজের নেশা ছাড়াও তার ঘোরাঘুরির নেশা রয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট এগারোটা দেশ ঘুরেছেন। বিদেশে ঘুরে বেড়ালেও ভালোবাসার জায়গা চিটাগং ও কক্সবাজার।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইশরাতের বড় পরিসর এ সামাজিক উন্নয়ন এ কাজ করতে চান, যুব সমাজ ও আসন্ন যুবদের সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। তার একটি ইউটিউব চ্যানেল নির্মাণাধীন। সময়ের অভাবে কাজটি করতে পারছেন না, কিন্তু খুব শীঘ্রই আরো মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে চান ইশরাত রউফ।
ঢাকা: নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সরকার শক্তি প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর সৈয়দ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। কোনো মানবিক সরকারের পক্ষে এমন আচরণ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের পূর্ব গেইটে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে সাধারণ মানুষ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে আতংক তৈরি করা হয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক আন্দোলনকে সরকার শক্তি প্রয়োগ ও হামলা-মামলার মাধ্যমে দমন করছে। কোনো মানবিক সরকারের পক্ষে এমন আচরণ করা সম্ভব না।’
সর্বক্ষেত্রে অতি রাজনীতি ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সরকার তথাকথিত রাজনীতির গন্ধ পেয়ে হামলা-মামলা করেছে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর। অন্য দিকে কেউ কেউ এই আন্দোলনে ভর করে ক্ষমতায় যাওয়ার পাঁয়তারা করছে। এভাবে সর্বক্ষেত্রে অতি রাজনীতি সবার জন্যই ক্ষতিকর।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম ও জবর-দখলের সয়লাব চলছে। মন্ত্রী-বিচারপতি ও পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সড়ক আইন মানছেন না। নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি হচ্ছে, ব্যাংক লুটপাট হচ্ছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’
পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের ছলচাতুরী সহ্য করা হবে না। দেশ পরিচালনায় জনমতের যথার্থ প্রতিফলন ঘটাতে হবে। সিইসি যদি এই দায়িত্ব পালনে সাহস না করে, তাহলে তারা পদত্যাগ করুক। কিন্তু অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হতেই হবে।
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল এম. হাছিবুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদসহ অন্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।