লোকসানের অজুহাতে গাইবান্ধা-ঢাকা বিআরটিসি এসি বাস সার্ভিস বন্ধ
লোকসানের অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গাইবান্ধা-ঢাকা ভায়া বগুড়া রুটে বিআরটিসির এসি বাস সার্ভিস। অথচ একই রুটে অসংখ্য অন্য বাস চলাচলে কোনো লোকসান নেই। সাধারণ যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন কার স্বার্থে বন্ধ করা হলো বিআরটিসির বাস সার্ভিস?
গত ১৪ আগস্ট গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আনুষ্ঠানিকভাবে গাইবান্ধা থেকে বগুড়া হয়ে ঢাকার কমলাপুর পর্যন্ত বিআরটিসির এসি বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন। পরদিন ১৫ আগস্ট থেকে বিআরটিসি বগুড়া বাস ডিপোর অধীনে এসি বাস চলাচল শুরু করে। কিন্তু এক মাস না যেতেই গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে বগুড়া ডিপো ম্যানেজার এই রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।
জানা গেছে, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বীর চেষ্টায় এই বাস সার্ভিসটি চালু করা হয়। ৪৫ সিটের দুইটি এসি বাস প্রতিদিন সকাল ৮ টায় এবং রাত ৮টায় গাইবান্ধা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে এবং একই সময়ে ঢাকার কমলাপুর বিআরটিসি বাস ডিপো থেকে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে চলাচল শুরু করে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয় গাইবান্ধা থেকে ৬০০ টাকা এবং বগুড়া থেকে ৫০০ টাকা। পাবলিক বাসের তুলনায় বিআরটিসির এসি বাসের ভাড়া কম হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে। বগুড়া এবং গাইবান্ধা থেকে বিআরটিসি বাসে ঢাকা যাওয়ার জন্য অগ্রিম টিকিট নেয়ার জন্য ব্যাপক ভিড় ছিল। বাস সার্ভিস বন্ধ হওয়ার পরেও এখনও অনেকেই টিকিট নেয়ার জন্য কাউন্টারে গিয়ে ঘুরে আসেন।
ঢাকাগামী বিআরটিসি এসি বাসের যাত্রী অ্যাডভোকেট পরাগ শেখ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, তিনি ঢাকা যাওয়ার জন্য বিআরটিসি বগুড়া ডিপোতে টিকিট নিতে গেলে বাস বন্ধের বিষয়টি জানতে পারেন। এ সময় বিআরটিসি কাউন্টার থেকে তাকে পাশের একতা পরিবহনের কাউন্টার দেখিয়ে দিয়ে ওই বাসে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
এদিকে, বাস সার্ভিস বিআরটিসি ডিপোর অধীনে চলাচল করলেও বহিরাগত খোকন নামের একজনকে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি দুই লাখ টাকা জামানত দিয়ে বাস দুইটির দায়িত্ব দেন। বগুড়ার যাত্রীদের সুবিধার জন্য বিআরটিসি ডিপো ছাড়াও শহরের শেরপুর রোডে টিকিট বিক্রি হতো।
খোকন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘গাইবান্ধা থেকে ঢাকা যাতায়াতের পর প্রতিটি বাস থেকে প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকা বিআরটিসি ডিপোর সাথে চুক্তি ছিল।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় যাওয়ার সময় যাত্রীদের চাপ থাকলেও ঢাকা থেকে ফেরার সময় যাত্রী কম হয়। এ কারণে কিছুদিন টাকা কম নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলে ম্যানেজার তা শোনেননি। এ কারণে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ায় বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়।’
বিআরটিসি বগুড়া বাস ডিপোর ট্রাফিক পরিদর্শকের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজাউল করিম বার্তা টোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘প্রধান কার্যালয় থেকে বাস প্রতি ২৫ হাজার টাকা টার্গেট দেয়া হয়েছিল। কিন্তু টার্গেট পূরণ না হওয়ায় ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।’
বিআরটিসি বগুড়া বাস ডিপোর ম্যানেজার ওমর ফারুক মেহেদী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ঢাকা যাওয়ার যাত্রীর চাপ থাকলেও ঢাকা থেকে ফেরার সময় যাত্রী কম হওয়ায় লোকসানের মুখ দেখতে হয়। এ কারণে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।