বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব
প্রতিবছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও শুক নদীর তীরে বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরা উৎসব। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে বাঁধের গেট খুল দেয়ায় এ উৎসবে যোগ দিয়েছেন আশেপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ও ও চিলারং ইউনিয়নের শুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ এলাকায় গেলে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাঁদার মধ্যে মাছ খুঁজছে। আর নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ ভিড় জমিয়েছে মাছ ধরা দেখতে। অনেকে মাছ না ধরলেও বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আচকা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর উপর একটি জলকপাট (স্লুইসগেইট) নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।
সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে এসেছেন আবুল কাশেম। তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, মাছ ধরা উৎসবের কথা শুনে গতকাল রাতে এখানে এসেছি। পুঁটি মাছ,গুড়া মাছ, রুই মাছ সহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ জালে আটকা পড়তে দেখেছি।
আব্দুস সালাম নামের এক মাছ শিকারি বলেন, আমরা প্রতিবছর এই সময় বুড়ির বাঁধে মাছ ধরতে আসি। এখানে দেশি-বিদেশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
নারগুন এলাকা থেকে মাছ ধরতে আসা মানিক মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সকাল থেকেই মাছ ধরছি। জাল নিয়ে আমরা তিনজন এসেছি। মাছ খুব একটা ধরা পড়ছে না । কারণ অনেক মানুষ জাল ফেলেছে। তারপরও চেষ্টা করছি। যা পাবো বিক্রি করে দিবো।
ঠাকুরগাঁও শহরের হাজীপাড়া এলাকা থেকে মাছ কিনতে আসা আব্দুল গণি বলেন, এখানে মাছ একটু কম দামে পাওয়া যায়। তাই প্রতিবারের মতো এবারো এসেছি মাছ কিনতে।
ঠাকুরগাঁও আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ জানান, মাছ ধরার উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও মানুষের ঢল নেমেছে। এখানে কেউ মাছ ধরতে আসেন, কেউ বা আসেন মাছ ধরা দেখতে আবার কেউ আসেন কম দামে মাছ কিনতে। সেই যাই হোক এ সময় পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে উঠে।