সরকারি হাসপাতালে পানি নেই ১০ দিন, দুর্গন্ধে টেকা দায়

  • অভিজিৎ ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, টাঙ্গাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

১০ দিন ধরে হাসপাতালে পানি নেই, দুর্ভোগে রোগীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

১০ দিন ধরে হাসপাতালে পানি নেই, দুর্ভোগে রোগীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

পানি সরবরাহ ১০দিন বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। যেসব রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা বিপদে পড়েছেন সবচেয়ে বেশি। পানির অভাবে পুরো হাসপাতাল জুড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পানির অভাবে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার কর্মরত চিকিৎসকরা। হাসপাতালের বাইরের টিউবওয়েল থেকে বালতি করে পানি এনে জরুরি বিভাগ চালাতে হচ্ছে তাদের। যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা পানির অভাবে নিয়মিত টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন না। তাদেরও একই পদ্ধতিতে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এতে কোনোভাবেই টয়লেট থেকে দুর্গন্ধ দূর হচ্ছে না। ফলে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

এদিকে, সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পানি সরবরাহের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদফতর। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।

বিজ্ঞাপন
পানি নেই হাসপাতালে
পানির অভাবে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন বেশিরভাগ রোগী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

জানা গেছে, চলতি মাসের ১০ অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি সরবরাহের পাম্পটি বিকল হয়ে যায়। এতে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় পুরো হাসপাতাল জুড়ে। ঘটনার ১০দিন অতিবাহিত হলেও বিকল পাম্পটি চালু করতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদফতর। পানির অভাবে ৫০ শয্যার এই হাসপাতাল এখন প্রায় রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে।

চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার নিকলা দড়িপাড়া গ্রামের কল্পনা বেগম বলেন, ‘৩ দিন হয়ে গেল টাইফয়েড জ্বরের কারণে মা হাসপাতালে ভর্তি। টয়লেটে পানি না থাকায় খুবই অসুবিধা হচ্ছে। আমরা গরীব মানুষ। অন্য কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব না।'

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গোপালপুর উপজেলার দক্ষিণ মান্দিয়া গ্রামের ফারুক মিয়া বলেন, ‘শ্বাসকষ্টজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু পানি নেই হাসপাতালে। এতে দূর্গন্ধের কারণে অসুখ আরও বেড়ে গেছে।'

হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা জানান, পানি সরবরাহ না থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। হাসপাতাল জুড়ে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে গেছে। রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের জুনিয়র মেকানিক খোরশেদ আলম বলেন, ‘হঠাৎ করে পাইপে আয়রন জমে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।'

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহীউদ্দিন আহম্মেদ জানান, হঠাৎ করেই পাম্পটির ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বন্ধ আছে পানি সরবরাহ। জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে অবহিত করার পর সহকারী প্রকৌশলী পাম্প দেখে গেছেন। আশা করছি অতিদ্রুত পাম্পটি মেরামত করে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।