মৃত্যুর পর করণীয়
মানুষ মরণশীল। প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে। কোনো মানুষ যখন মারা যায় কিংবা মৃত্যুশয্যায় পতিত হয় তখন তার পরিবারের বা আশপাশের লোকজনের কিছু করণীয় রয়েছে। তা হলো- মৃত্যুশয্যায় শায়িত ব্যক্তির চেহারা কিবলামুখী করে দেওয়া এবং তার সামনে বসে তাকে শুনিয়ে কালেমা পড়তে থাকা। তবে তাকে কালেমা পড়তে বলবে না।
কোনো মুসলমানের মৃত্যুর খবর শুনে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়া। মৃত ব্যক্তির দুই চোখ ও মুখ খোলা থাকলে বন্ধ করে দেওয়া। প্রয়োজনে মাথার ওপর ও থুতনির নিচ দিয়ে কাপড় বেঁধে দেওয়া।
চেহারা দেখা, আত্মীয়-স্বজনদের আসা, জানাজায় লোক কম হবে- এসব কথা বলে দাফন করতে দেরি করা নিষেধ। -সহিহ মুসলিম: ৯২০
যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি মৃত ব্যক্তিকে গোসল, কাফন ও জানাজা সম্পন্ন করে নিকটস্থ গোরস্তানে দাফনের ব্যবস্থা করা। দাফনের জন্য বিনা অপারগতায় দূরের গোরস্তানে বা এক শহর থেকে অন্য শহরে নেওয়া মাকরুহ।
জানাজার পরে দাফনের পূর্বে হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা নিষেধ এবং জানাজার পর থেকে মুর্দার চেহারা দেখানো নিষেধ।
মৃত ব্যক্তির লাশ কবরে রাখার সময়- ‘বিসমিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ’ দোয়াটি পড়া। -সুনানে আবু দাউদ: ১০৪৬
কবরে লাশ পুরোপুরি ডান কাতে শোয়ানো অর্থাৎ তার চেহারা ও সীনা কিবলামুখি করে দেওয়া। মৃত ব্যক্তিকে কবরে চিৎ করে শুইয়ে শুধু তার চেহারা কিবলামুখি করে দিলেই সুন্নতের অনুসরণ হবে না।
কবর খুব বেশি উঁচু না করা এবং পাকা না করা। কবরের ওপর পানি ছিটিয়ে দেওয়া। মৃত ব্যক্তির দাফনকার্য সম্পন্ন করার পর হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে তার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করতেন এবং অন্যদেরকেও মাগফিরাতের দোয়া করতে বলতেন। বিশেষত মুনকার-নাকির ফেরেশতাদ্বয়ের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে সে যেন দৃঢ়পদ ও অবিচল থাকতে পারে, সে জন্য দোয়া করতে বলতেন।
আত্মীয়-স্বজনদের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির পরিবার-পরিজনের জন্য প্রথম দিন খাবারের ব্যবস্থা করা উচিত। মৃত ব্যক্তির ওপর যাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব ছিল, শুধু তারাই এ খাবার খাবে। আগন্তুক মেহমানরা এই খাবারে শরিক হবে না। বরং তারা সান্তনা দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে যাবে। এ অবস্থায় তাদের ওপর বোঝা সৃষ্টি করবে না। -সহিহ বোখারি: ৫৪১৭