কুশিয়ারা বাঁধে ভাঙন, ৫০ গ্রাম প্লাবিত
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি।
রোববার (১৪ জুলাই) বিকালে জামারগাঁও রাধাপুর জামে মসজিদের কাছে 'কুশিয়ারা ডাইকে' এই ভাঙন দেখা দেয়। রাতের মধ্যে কয়েক হাজার বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনও বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনদিন ধরেই পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা কুশিয়ারার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত বাঁধ রক্ষা সম্ভব হয়নি। রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে হঠাৎ করেই বাঁধের রাধাপুর অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এতে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার ফসলি জমি। সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো- আউশকান্দি ইউনিয়নের বনগাঁও, পারকুল, ঢালার পাড়, ব্রাক্ষণ গ্রাম, পাহাড়পুর, ইসলামপুর এবং দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক, কসবা, কুমারকাঁদা, ফাদুল্লাপুর, রাধাপুর, দূর্গাপুর, জামারগাঁও, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ইনাতগঞ্জ বাজার, উমরপুর, পূর্ববাজার কলনী, চন্ডিপুর, বটপারা, বাউরকাপন, মোকামপারা, রাজনগরসহ আশ পাশের অন্তত ৫০টি গ্রাম।
এদিকে, পানিবন্দি মানুষদের জন্য ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের সবগুলো স্কুলে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে যেতে শুরু করেছেন পানিবন্দি মানুষেরা। তাদের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০০ টন চাল ও ৯৭১ বান্ডিল টিন মজুদ রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে কন্টোলরুম। সেখান থেকে বন্যার্তরা সার্বক্ষণিক সেবা পাবেন।
নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সাইদ বলেন, ‘আমরা সারারাত পাহারা দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাঁধ রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিকালে হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়ে প্রায় ১০০ হাত জায়গা নিয়ে বাঁধটি ভেঙে যায়। প্রতিনিয়ত বাঁধের ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতের মধ্যে ভাঙন বিশাল আকার ধারণ করবে।’
হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে ভাঙন দেখা দেয়। সেখানে বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন।’
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন হাসান বলেন- ‘উপজেলায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে সার্বক্ষণিক হট লাইন নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারবেন পানিবন্দি লোকজন। এছাড়া বন্যার্তদের সহযোগিতায় চাল ও টিন মজুদ রয়েছে।