সিরাজগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সোয়া ৩ লাখ মানুষ
যমুনা নদী সিরাজগঞ্জের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়ন ও তিনটি পৌরসভার ৪০০টি গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে। আর এসব এলাকার প্রায় সোয়া তিন লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৪৩৪ জন। আংশিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিন লাখ ১৩ হাজার ১৭৭ জন। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ির সংখ্যা ৫০ হাজার ৩১৮টি। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ হাজার ৫০৫টি ও আংশিক ৪৩ হাজার ৮১৩টি।
এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিপুল সংখ্যক রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জেলার ১৫ হাজার ৯৫৯ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে তিন হাজার ৪০০ হেক্টর জমির ধান, পাট ও শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসল। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ নিঃস্ব অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায়ত্বের খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আয়-রোজগার না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে। ওষুধ কেনার সামর্থ্য না থাকায় রোগবালাই নিয়েই কষ্টে দিনযাপন করছে।
বন্যার্তদের অভিযোগ, এখনো পর্যন্ত কোনো সহায়তা পায়নি। আর সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসন বলছে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, কোনো বানভাসি ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে না। এ অবস্থায় শিশুখাদ্যসহ শুকনো খাবার ও ওষুধ সহায়তার দাবি বন্যা কবলিতদের।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মেদ জানান, যমুনার পানি কমলেও বিপদসীমার ওপরেই রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৯৮ দশমিক তিন টন জিআর চাল, পাঁচ লাখ নগদ টাকা ও তিন হাজার ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ রয়েছে আরও ৫০১ মেট্টিক টন জিআর চাল, আট লাখ টাকা ও সাড়ে ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার।
বানভাসিদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রে ১১৫টি তাবু সরবরাহ করা হয়েছে। মজুদ রয়েছে ৩৮৫টি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুত রয়েছে জেলা প্রশাসনের। ত্রাণেরও কোনো সংকট নেই।