বাংলা ব্যাকরণের প্রথম প্রণেতা ঢাকার পর্তুগিজ!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

একজন বিদেশি প্রথম অনুধাবন করেন সুশৃঙ্খল, শুদ্ধ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাংলা ভাষা চর্চার প্রয়োজনীয়তা। আদর্শ মানের ভাষা চর্চা ও ব্যবহারে জন্য যে ব্যাকরণ বা গ্রামারের প্রয়োজন, তা তিনি বুঝেছিলেন। বাংলা ভাষার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন সেই বিদেশি বাংলা প্রেমিক, জাতিতে যিনি ছিলেন পর্তুগিজ। কাজটি তিনি করেছিলেন ঢাকার কাছেই ভাওয়াল অঞ্চলে, ১৭৩৪ সালে।

ভাষা চর্চার জন্য অভিধান আর ব্যাকরণের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকরণকে বলা হয়ে থাকে ভাষার হাতিয়ার। নিয়ম-রীতি জেনে সঠিকভাবে ভাষা চর্চা করতে হলে ব্যাকরণ জানতে হবেই। হাতিয়ার ছাড়া যেমন কোনো কাজ করা সম্ভব নয়, ব্যাকরণ ছাড়া তেমনি শুদ্ধভাবে ভাষা চর্চা করা অসম্ভব।

আসলে ব্যাকরণ হচ্ছে ভাষা ব্যবহার ও প্রয়োগের নিয়মবিধি। ভাষা ব্যবহারে শৃঙ্খলা ও নিয়ম বজায় রাখার কাজটি করে ব্যাকরণ। বাক্য, শব্দ, পদ, লিঙ্গ ইত্যাদি আরো নানা কিছুর সঠিক নির্দেশনা ব্যাকরণে পাওয়া যায়।

বিভিন্ন ভাষা যেমন পার্থক্য ও বৈচিত্র্যপূর্ণ, সেসব ভাষার ব্যাকরণও তেমনি আলাদা। বাংলা ভাষা যেসব নিয়ম-রীতি মান্য করে, স্প্যানিশ বা আরবি তেমন নয়। ভাষা ভেদে ব্যাকরণও পৃথক বা আলাদা হয়। 

বাংলা ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণের ইতিহাস খুব বেশি প্রাচীন নয়। মুঘল আমলের ক্ষয়িষ্ণু সময়ে বাংলায় বিদেশি বণিক ও ধর্মযাজকদের বিকাশের আমলেই প্রথাগত ব্যাকরণ রচনার সূত্রপাত ঘটে। বিদেশিরা এদেশে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য, কাজ-কর্ম করার প্রয়োজনে ভাষা শেখার তাগিদ অনুভব করেন। তখন তারা স্বদেশিদের এদেশে কাজের উপযোগী করার প্রয়েোজনে বাংলা শেখানোর জন্য ম্যানুয়েল আকারে ব্যাকরণ প্রণয়ন শুরু করেন। 

রাজনৈতিক দিক দিয়ে নাজুক ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে বহিরাগত ইউরোপীয় শক্তির মধ্যে ইংরেজরা ক্ষমতা কব্জা করে। ইংরেজরা বাংলা তথা ভারত দখল করে নানা কিছু করলেও ব্যাকরণ রচনায় প্রথমে আসে একজন পতুর্গিজের নাম।

পতুর্গিজ পাদ্রি মনোএল দ্য আসসুম্পসাউ ঢাকার দক্ষিণে ভাওয়াল এলাকার নাগরী নামক খ্রিস্টান পল্লীতে ১৭৩৪ সালে পতুর্গিজ ভাষায় রচনা করেন বাংলা ব্যাকরণ। তার গ্রন্থের দুটি অংশ ছিল। একটি ব্যাকরণ, অন্যটি পর্তুগিজ-বাংলা ও বাংলা-পতুর্গিজ অভিধান।

মনোএল-এর কাজটি এদেশে ছাপার সুযোগ সে আমলে ছিল না। তখন সবে মাত্র প্রেস আবিষ্কৃত হয়েছে এবং সামান্য কয়েকটি প্রেস আছে ইউরোপের কিছু দেশে। ফলে ঢাকায় বসে রচনা করা হলেও দশ বছর পর ১৭৪৩ সালে পতুর্গালের রাজধানী লিসবন থেকে সেটি রোমান হরফে ছাপা হয়। কারণ বাংলা হরফ বা টাইপ তখন ছিল কল্পনার বিষয়। 

বাংলা ভাষার দ্বিতীয় ব্যাকরণ গ্রন্থের প্রণেতাও একজন বিদেশি। তার নাম নাথানিয়েল ব্র্যাসি হলহেড। পর্তুগিজ মনোএল-এর ৩৫ বছর পর ১৭৭৮ সালে হলহেড যে ব্যাকরণ গ্রন্থ প্রকাশ করেন, তা উপমহাদেশের মুদ্রণ ইতিহাসের স্মরণীয় অংশ। কারণ বইটি এদেশে ছাপা হয় এবং এটি মূলত ইংরেজি ভাষায় রচিত হলেও উদাহরণ স্বরূপ কিছু বাংলা হরফও এতে ছাপা হয়। 

কোনো পুস্তকে প্রথম বারের মতো বাংলা হরফ ছাপানোর কৃতিত্বটিও এখানে দেখা যায়। হলহেডের বইয়ের হাত ধরে সর্বপ্রথম মুদ্রিত হয় বাংলা অক্ষর। এজন্য বাংলা হরফগুলো ছাপার উপযোগী কাঠের ব্লক বানিয়ে ছিলেন চার্লস উইলকিনসন ও পঞ্চানন কর্মকার। 

পুরো আঠারো শতকে এই দুটি নমুনা ছাড়া ব্যাকরণ রচনার অগ্রগতির ক্ষেত্রে আর কোনো উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায় না। পরের শতকে ব্যাকরণ চর্চার পরিস্থিতি বেশ অগ্রসর হয়। ফলে উনিশ শতকে বাংলা ব্যাকরণ লেখার অনেকগুলো নমুনা দেখা যায়। এর কিছু ব্যাকরণ বিদেশি লেখকদের দ্বারা ইংরেজি ভাষায় রচিত। বাকীগুলো স্থানীয় পণ্ডিতদের দ্বারা প্রণীত। 

সে সময়ের শাসক ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া কলকাতার অদূরে শ্রীরামপুরে প্রতিষ্ঠিত পাদ্রি উইলিয়ার কেরির ছাপাখানাও বাংলা মুদ্রণ এবং ব্যাকরণ চর্চায় ঐতিহাসিক অবদান রাখে।

অবশ্য এসব কাজে তাদের উৎসাহের অন্তর্নিহিত কারণ অকৃত্রিম বাংলা ভাষা প্রেম নয়, তা ছিল (১) রাজনৈতিক ও প্রশাসনের প্রয়োজনে, (২) ব্যবসা-বাণিজ্য-অর্থনৈতিক স্বার্তগত প্রয়োজনে, এবং (৩) খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারের প্রয়োজনে।

ইংরেজ আমলে বিদেশি লেখক ও সংস্কৃত পণ্ডিতদের দ্বারা প্রণীত ব্যাকরণ ল্যাটিন এবং সংস্কৃত ভাষার রীতি মেনে রচিত এবং বাংলাকে সে ধাঁচে ফেলে আলোচনা করা হয়। ফলে অনেক কঠিন নিয়ম তখন বাংলা ব্যবহারে চাপিয়ে দেওয়া হয়। শব্দ গঠন, বাক্য গঠনে বিদ্যমান থাকে অনেক প্রাচীন রীতি। ক্রমে ক্রমে ভাষা ব্যবহার বিধিতে জটিলতা এড়িয়ে অনেক নিয়ম সহজ করা হয়, যা এখনো হচ্ছে।

ব্যাকরণ যেমন ভাষা ব্যবহারের নিয়ম নির্ধারণ করে, তেমনি মানুষ ও সমাজ তাদের ভাষা চর্চায় দীর্ঘকাল যাবত অন্তর্ভুক্ত অনেক কিছুকেই ব্যাকরণ-সিদ্ধ করে নেয়। ফলে ব্যাকরণকে অনঢ় বা স্থবির হলে চলে না। কিংবা উপর থেকে চাপিয়ে দিলেও কাজ হয় না। ব্যাকরণকে মানুষ ও সমাজে প্রচলিত ভাষার গতি-প্রকৃতি ও মনোভাবটিকেও আত্মস্থ করতে হয়। এ কারণেই ব্যাকরণ একটি জীবন্ত ভাষার জন্য নিজেকে জীবন্ত রাখতে বাধ্য হয়। সময় সময় নানা পরিবর্তন ও অদল-বদল মেনে নিতেও হয় ব্যাকরণকে।

ঢাকায় ভাষা আন্দোলনের কারণে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলা ভাষার যেমন অভূতপূর্ব বিকাশ সাধিত হয়েছে, তেমনি ব্যাকরণেও বিদেশি প্রভাব অনেকাংশে লুপ্ত হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তরফে ভাষা চর্চার নির্দেশনামূলক সহজ ও বোধগম্য ব্যাকরণ প্রণীত হচ্ছে। এখন হাতের কাছে পাওয়া যাচ্ছে একাধিক ব্যাকরণ গ্রন্থ। ইচ্ছে করলেই যে কেউ ব্যাকরণ অনুসরণ করে পরিশীলিত ও শুদ্ধ বাংলা চর্চা করতে পারেন।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;