বিচ্ছেদ ঘটুক পাঁচ অভ্যাসে!

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরটা শেষের দিকে।

নতুন বছর শুরু হতে খুব বেশিদিন আর বাকি নেই। বড়জোর মাসখানেক। এরপরেই তরতাজা একটি নতুন বছর, নতুন সময়। তবে নতুন বছরে পুরনো দিনের জঞ্জালকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাইলেও পিছিয়ে থাকতে হবে। ভাবুন তো একবার, এই বছরটা শুরুর সময়ে কত কিছু করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তার কতটা আদতে করা হয়েছে! টু ডু লিস্টটাই হয়তো হারিয়ে গেছে।

নতুন বছরের জন্য নতুনভাবে টু ডু লিস্ট তৈরি করার আগে কিছু বিষয়কে ঝেড়ে ফেলতে হবে জীবন থেকে। অন্তত ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে এখন থেকেই, যেন বছর শেষ হবার আগেই নিজেকে প্রস্তুত করে ফেলা সম্ভব হয়। জীবনে ইতিবাচক এনার্জি ও চিন্তাধারা আনার জন্য নেতিবাচক কিছু বিষয়কে বিদায় জানাতেই হবে।

বিজ্ঞাপন

সবাইকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়

ইদানিং লোকমুখে একটা কথার খুব চল এসেছে, ‘আমি তো আর বিরিয়ানির প্যাকেট নই যে সবাইকে খুশি করতে পারবো’। মজাচ্ছলে বলা হলেও কথাটা বাস্তব জীবনেও খুব সত্য। আপনার আশেপাশের প্রতিটি মানুষের মানসিকতা ভিন্ন। সবার প্রত্যাশার সঙ্গে মানিয়ে চলা, সবাইকে খুশি রাখা প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েও অনেক কিছু করতে হয়। অনিচ্ছা স্বত্বেও মেনে নিতে হয় অনেক সিদ্ধান্ত, নইলে সাথে থাকা মানুষ রাগ করবে। এতে অন্যকে খুশি করার বিপরীতে নিজেকে অখুশি করা হয়। এই অভ্যাসটাকে বিদায় জানাতে হবে পুরোপুরি। সবার আগে নিজেকে প্রাধান্য দেওয়া শিখতে হবে।

পরিবর্তনে নয় ভয়

নিজেকে পরিচিত গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ করে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু একইস্থানে থেকে গেলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই জীবনে পরিবর্তন আনতে হবে। সেটা হতে পারে ক্যারিয়ারে, জীবনযাপনের ধারায়, বাসস্থানে কিংবা অভ্যাসে। কারণ পরিবর্তন মানেই নতুন কিছু। নতুন উপলক্ষ, নতুন সম্ভবনা। পরিবর্তনকে জীবনে স্বাগত জানাতে শিখে গেলেই বোঝা যাবে নিজের দক্ষতা সম্পর্কে। নিজেকে চেনা যাবে নতুনভাবে। এমনকি পরিবর্তনটা হতে পারে সম্পর্কেও। অপছন্দের মানুষদের জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলে নিজেকে গুছিয়ে নেওয়াটাও কিন্তু এক ধরণের পরিবর্তন। শখের কাজকে আরো কিছুটা পরিণত করা কিংবা নতুন কোন শখের কাজ খুঁজে বের করাও পরিবর্তন আনে জীবনে। মোট কথা, পরিবর্তন আনতে হবে জীবন প্রবাহে।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/29/1543481688536.jpeg

অতীতকে বিদায়

সম্ভবত এটা সবচেয়ে কঠিন একটা কাজ। বলা যতটা না সহজ, পালন করা তার চাইতে দ্বিগুণ কঠিন। প্রতিটি মানুষের জীবনে থাকে না পাওয়ার আর্তনাদ, হতাশা, বিষণ্ণতা, মন ভাঙার কষ্ট। কিন্তু সেটাই জীবনের শেষ নয়। কারোর জীবনই সেখানে আটকে থাকে না। অতীতকে আঁকড়ে রাখলে এগিয়ে যাওয়াটা কষ্টকর নয়, ক্ষেত্র বিশেষে অসম্ভব হয়ে ওঠে। কিন্তু একবার যদি অতীতকে পেছনে ফেলে আসা সম্ভব হয়, তবে সামনে এগিয়ে যাওয়াটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

আত্মবিশ্বাসে নেই ছাড়

জানেন কি, আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু আপনি নিজেই! একবার ভাবুন তো, কতবার নিজেকে নিজেই ছোট করে দেখেছেন, নিজের প্রতি সন্দেহের তীর ছুঁড়ে দিয়েছেন! নিজেকে বিরুদ্ধে নিজেই বলেছেন ‘নেগেটিভ সেলফ টক’। যেখানে নিজেকে বিকশিত করা যেত, সেখানেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। অথচ একটুও আত্মবিশ্বাস সম্পূর্ণ ভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতে পারে আপনাকে। জীবনের সীমাবদ্ধতাগুলো আপনার নিজেদের মাথার ভেতরে সবার আগে তৈরি করি। নিজেকে অবহেলা করা, ছোট করে দেখার অভ্যাসের ফলে পিছিয়ে পড়ি অন্যান্যদের চাইতে অনেক বেশি। এই নেতিবাচক অভ্যাস বাদ দিতে হবে পুরোপুরি। আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে নিজের মাঝে।

অহেতুক চিন্তাকে বিদায়

ওভারথিংকিং মোটেও ভালো কোন গুণ নয়। এটাকে কোন গুণ হিসেবে নিজের মাঝে ধরে রাখাটা হবে বোকামি। বাড়তি চিন্তা মানসিক অশান্তি ও দুশ্চিন্তা বাড়ায় শুধু, ফলাফলে ইতিবাচক কোন প্রভাব আনে না। নিজের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা ও পরিশ্রম করতে হবে অবশ্যই। কিন্তু কোনভাবেই সেটা নিয়ে বাড়তি চিন্তায় সময় নষ্ট করা যাবে না।

আরো পড়ুন: আত্মবিশ্বাসী মানুষেরা যে কাজগুলো কখনোই করেন না!

আরো পড়ুন: এখনই নজর দিন নিজের অর্থনৈতিক অবস্থায়