এই লক্ষণগুলো প্রকাশ করে, জীবনে পরিবর্তন চান আপনি!
পরিবর্তন কখনোই সহজ কোন ব্যাপার নয়।
ক্ষেত্র বিশেষে বেশ ভীতিকর। বেশিরভাগ মানুষ প্রতিদিনের অভ্যস্ততার ভেতরে থাকতেই ভালোবাসেন, পছন্দ করেন। এর মাঝেও ‘কিন্তু’ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে কখনো সখনো। কিছু মানুষ পরিবর্তন চায়, নিজের জীবনকে ভিন্ন মোড়ে ঘুরিয়ে নিতে চায়। একই ছন্দে আবদ্ধ জীবন তাদের কাছে হয়ে ওঠে অসহ্যকর।
আপনি হয়তো খুব সাদামাটাভাবেই জীবন কাটাচ্ছেন। এর মাঝে কীভাবে বুঝতে পারবেন যে, আপনিও অবচেতনভাবে পরিবর্তন চাচ্ছেন নিজের জীবনে? মিলিয়ে নিন কিছু লক্ষণ।
আরও পড়ুন: হতাশাকে বিদায় জানান সহজেই
আপনি দীর্ঘদিন যাবত বিরক্ত
প্রতিদিনের একঘেয়েমি কাজের চাপে মাঝে মাঝেই বিরক্তিবোধ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। যে বিরক্তিবোধ হয়তো এক কিংবা দুই দিন স্থায়ী হয়। এরপর সবকিছুই আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে বিরক্তিবোধ যদি অনেক বেশি জেঁকে বসে মনের ভেতর এবং সেই বিরক্তিবোধ যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, বুঝতে হবে নিজের জীবনে কিছুটা পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। মানুষ সাধারণত একই প্যাটার্ন ও একই রুটিনে অভ্যস্ত হতে পছন্দ করে। একইসাথে জীবনে পরিবর্তনের মোড়কেও খোঁজে। কারণ ধরাবাঁধা রুটিন জীবনে স্বস্থিবোধ কাজ করলেও থাকে না কোন উচ্ছ্বাস।
বর্তমান অবস্থার বিপরীতে আগ্রহ বেশি
যান্ত্রিক ও ব্যস্ত শহরে বসবাসরত অবস্থায় মনের ভেতর সবসময় গ্রামীণ পরিবেশের চিত্রপট ঘুরছে? এখন যেভাবে আছেন সেটার ঠিক বিপরীত অবস্থা যদি আপনাকে অনবরত আকর্ষণ করে, নিজেকে সেইভাবেই গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। ‘দ্যা বুক অফ স্যাকরেড বাথস’ এর লেখিকা এবং রিলেশনশীপ এক্সপার্ট পালেত্তে শেরমান জানান, নিজের মনের কথা শোনা উচিৎ সবসময়। যদি শহুরে জীবন ভালো না লাগে, তবে নিজের পছন্দের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠাই হবে সঠিক কাজ। তিনি আরও জানান, একবারেই বড় কোন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী ও তালিকা তৈরি করে তবেই পরিবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুন: সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ
সম্পূর্ণ ভিন্ন জীবনধারা নিয়ে মনোবাসনা কাজ করা
‘কেমন হতো যদি আমি একজন ফটোগ্রাফার হতাম’ অথবা, ‘সমুদ্রের কাছে গেলে নিশ্চয় খুব ভালো লাগতো’ এমন ধরণের মনোবাসনা কাজ করে কী? প্রায়শ নিজেকে একদম অন্য একটা অবস্থায়, অবস্থানে ও জীবনধারায় ভাবতে ভালোবাসেন কী আপনি? কন্সালটেন্ট ও প্রাইভেট সাইকোলজিস্ট মারনি অ্যামসেলাম জানান, এমন দিবাস্বপ্ন দেখা ও অপূর্ণ মনোবাসনা কাজ করার মাধ্যমে প্রকাশ পায়, জীবনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
মারনি এক্ষেত্রে পরামর্শ দেন, অবাস্তব কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য। বরঞ্চ বাস্তবধর্মী ও নিজের পছন্দ অনুযায়ী কোন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেটা হতে পারে দুই দিনের জন্য ছুটি নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়া কিংবা বহুদিনের পুরনো বন্ধুর সাথে আড্ডা দেওয়া। মোট কথা প্রতিদিনের জীবনে একটু ভিন্নতা নিয়ে আসা।
নির্দিষ্ট কোন কিছুর প্রতি অতিরিক্ত আকর্ষণ তৈরি হওয়া
আশেপাশে কী ঘটছে বা কী হচ্ছে, কোন কিছুর প্রতিই কোন আগ্রহ কাজ করবে না আপনার। একইসাথে দেখা যাবে, হুট করেই নিজের প্রিয় কোন কাজের উপর তৈরি হয়েছে বাড়তি আসক্তি। হয়তো খেতে খুব ভালোবাসেন, সিনেমা দেখতে ভালো লাগে কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলে মন ভালো থাকে- এমন যেকোন প্রিয় কাজটি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি করা হচ্ছে আপনার। অথবা প্রায় সারাক্ষণ মোবাইলে নানান ধরণের সোশ্যাল অ্যাপে ঘুরাঘুরি করছেন আপনি। কিন্তু কোনটাতেই বেশিক্ষণ আগ্রহ থাকছে না।
আরও পড়ুন: আর নয় জ্যামে বসে সময় নষ্ট!
ট্রান্সফরমেশনাল লাইফ কোচ ও স্পিরিচুয়াল সাইকোলজিস্ট এলসি স্ট্রম জানান, এমন লক্ষণ প্রগাড়ভাবে দেখা দেবার অর্থ, আপনার জীবনে খুব দ্রুত কোন ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন। সেটা হতে পারে নিজের চাকরি জীবন সংক্রান্ত, জীবনযাপনের ধরণ সংক্রান্ত। এমনকি সেটা হতে পারে সাইকোলজিক্যাল থেরাপির মতো ছোট কোন পরিবর্তন।
নিজের অস্বস্তিকে বিদায় জানিয়ে যখনই ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করবেন, জীবনের সবকিছুর প্রতি নতুনভাবে আগ্রহ কাজ করা শুরু করবে। সময়ে সময়ে জীবনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। নইলে নিজের বিকাশেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় একঘেয়েমি জীবন।