হবিগঞ্জে মাছ মেলায় বাঘাইড় দাম এক লাখ টাকা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, হবিগঞ্জ, বার্তা২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

হবিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পইল মাছের মেলায় একটি বাঘাইড় মাছের দাম হাঁকা হয়েছে এক লাখ টাকা। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী মাছের মেলা। মেলায় প্রায় ৪০ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছটি বাজারে এনেছেন বানিয়াচং উপজেলার বাধাউড়ি গ্রামের বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান।

প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তিতে আয়োজিত এ মেলাটি প্রায় দুইশ’ বছরের অধিক সময় ধরে চলে আসছে। পইলসহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ এ মেলাটিকে তাদের পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য বলে ধারণ করেন। এ মেলার আয়োজন করে স্থানীয় পইল ইউনিয়ন পরিষদ।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/15/1547559305704.jpg

মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাছ মেলায় বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসতে শুরু করেন। দুপুর গড়াতেই মেলায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। শুধু হবিগঞ্জ জেলাই নয়। সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মেলা দেখতে আসেন অনেকে। মেলায় বোয়াল, বাগাই, বড় আকৃতির আইড়, চিতল, গজার, রুই, কাতলসহ নানা প্রজাতির আকর্ষণীয় মাছ নিয়ে আসেন বিক্রেতারা।

বিজ্ঞাপন

মেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কয়েকশ বিক্রেতা অংশ নিয়েছেন পইল মাছের মেলায়। বড় বড় মাছের সঙ্গে অনেকে দেশীয় নানা প্রজাতির ছোট মাছও নিয়ে এসেছেন। বেচাকেনাও চলে ব্যাপক। প্রত্যেকটি দোকানের সামনে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। মানুষজন মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন, কিনছেন, আবার কেউ কেউ সেলফি তুলতেও ব্যস্ত।

পইল ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ বলেন- 'এটি আমাদের ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা। এ মেলায় দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা মেলা উপভোগ করতে আসেন। মেলায় দেশীয় বিভিন্ন ঐতিহ্য বহন করে।'

মাছ বিক্রেতা আব্দুল হামিদ বলেন- 'বিভিন্ন নদী ও হাওর থেকে মাছ আসে এখানে। আমি প্রতিবছরই এ মেলায় বিভিন্ন ধরণের ছোট-বড় মাছ নিয়ে আসি।'

তিনি বলেন- 'মেলাটি জেলার অন্যতম একটি মেলা। তাই এখানে প্রচুর বিকি-কিনি হয়।'

তবে দর্শনার্থীদের অভিযোগ ছিল ভিন্ন। অনেকেই মেলা তার নিজস্ব ঐতিহ্য হারিয়েছে বলে দাবি করেন।

মেলা ঘুরতে আসা বানিয়াচং উপজেলা শফিক মিয়া বলেন- 'কয়েক বছর আগে মেলার যে অবস্থা ছিল এখন আর নেই। মেলা বিভিন্ন ধরণের বড় বড় মাছ উঠত। কিন্তু এখন আর আগের মতো বড় মাছ উঠে না।'

মেলা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ আহমদুল হক জানান, 'ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাগ্মী নেতা বিপিন চন্দ্র পালের জন্মভূমি পইল গ্রামে প্রতিবছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।'

তিনি বলেন- 'মেলায় যাতায়াতের জন্য রাস্তাটি মারাত্মক অপ্রশস্ত। বার বার বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও এটি বড় করা সম্ভব হচ্ছেনা। এ ব্যাপারে সরকারের তেমন কোন সহযোগিতাও পাওয়া যাচ্ছেনা।'