পাবনায় ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে
রাস্তাঘাট, বাজার, অফিসপাড়া সবখানেই ভিক্ষুকের আনাগোনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন পাবনাবাসী। দিনদিন ভিক্ষুকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় একদিকে সরকারের উন্নয়ন হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক, কোর্ট এলাকা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বড় বাজার এলাকা, অনন্ত বাজার, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, উপজেলা শহরগুলো, ঈশ্বরদী রেল ষ্টেশন, চাটমোহর রেল ষ্টেশনসহ জেলার জনবহুল এলাকাগুলোতে ভিক্ষুকদের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা।
জেলা প্রশাসনের কার্যালয় চত্বরও ভিক্ষুকদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। লাঠি হাতে নতুবা হুইল চেয়ারে বসেই ভিক্ষা করতে বসে গেছেন ভিক্ষুকরা। এরা শুধু চেয়ে নয়, পিছু ধরে, গায়ের কাপড় চেপে ধরে ভিক্ষা আদায় করতে সকল ধরনের কলাকৌশল প্রয়োগ করে থাকে।
কয়েকজন চাকুরিজীবীর সাথে আলাপকালে তারা বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে অফিস থেকে বের হলেই বিপত্তিতে পড়তে হয় ভিক্ষুকের সামনে। শহরের সবচেয়ে জনবহুল এলাকাগুলোতে ভিক্ষুকের অত্যাচার বেশি।’
ভিক্ষুক নিয়ন্ত্রণের নামে সরকারি চাকরিজীবীদের কাছ থেকে বেতনের একটি নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা। এর পরও দিনদিন ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ায় তারা হতাশা ব্যক্ত করেন।
মহব্বত আলী নামের এক ক্রেতা জানালেন, ‘পাবনার এতিহ্যবাহী প্যারাডাইস সুইটস, লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, শ্যামল দই ভাণ্ডার ও বনলতা সুইটস-এর সামনে দিয়ে যাতায়াত করা বা মিষ্টি ক্রয় করা মানেই ভিক্ষুকের কবলে পড়া।’ ভিক্ষুক দমনে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানন তিনি।
এ বিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা সরকারি চাকরিজীবীরা এ জন্য টাকা জোগাড় করেছি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুদান পেয়েছি। সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ লাখ টাকা হয়েছে।’
এই টাকা আনুপাতিক হারে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাছে দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘যাদেরকে টাকা দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে পর্যবেক্ষণেও রাখা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘ভিক্ষুক নির্মূল ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে এ উপজেলায় ১১২ জন ভিক্ষুকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০ জনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।’