রূপগঞ্জে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ৩২
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা না দিয়ে বিনা নোটিশে একটি কারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। এতে পুলিশ বাধা দিলে পরিস্থিতি সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ ঘটনায় চার পুলিশসহ আন্তত ৩২ জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানার সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানান, উপজেলার তারাব পৌরসভার বরপা এলাকায় অবস্থিত অন্তিম নিটিং ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানার বিভিন্ন সেকশনে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রত্যেক মাসের ১০ তারিখের মধ্যে সব সেকশনের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার কথা থাকলেও ডিসেম্বর মাসের বেতন চলতি মাসের ১০ তারিখে পরিশোধ না করে গড়িমসি শুরু করে মালিকপক্ষ। পরে চলতি মাসের ১৬ তারিখে বেতন পরিশোধ করে দেওয়ার কথা বলে শ্রমিকদের কোন কিছু না জানিয়ে ২৩ জানুয়ারি (বুধবার) পর্যন্ত কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। ২৪ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বেতন পরিশোধ করা হবে উল্লেখ্য করে কারখানার দেয়ালে নোটিশ লাগিয়ে গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টারদিকে শ্রমিকরা কারখানার সামনে এসে দেখে আগামী ৩১ জানুয়ারি বেতন ভাতা পরিশোধ করা হবে এবং ওইদিন পর্যন্ত কারখান বন্ধ থাকবে উল্লেখ করে দেয়ালে আবারও নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এমনকি কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় কারখানার শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানের সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
পুলিশ বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করে তারা। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ শুরু করলে শ্রমিক পুলিশ সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে চার পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৩২ জন আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা দিতে একটু দেরি হচ্ছে। তবে আগামী ৩১ জানুয়ারি সকল বকেয়া বেতন পরিশোধ করে কারখানা পুনরায় চালু করা হবে।‘
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের এসপি জাহিদুল ইসলাম জানান, অন্তিম কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।
তিনি আরও জানান, পুলিশের চার সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি, ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।