উপজেলা নির্বাচন: মনোনয়নের লড়াইয়ে সরগরম কোম্পানীগঞ্জ

  • গিয়াস উদ্দিন রনি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নোয়াখালী, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নের দৌড়ে যারা রয়েছেন, ছবি: সংগৃহীত

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নের দৌড়ে যারা রয়েছেন, ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে একাদশ সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই, উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে ৬ থেকে ৮জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১জন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ১জনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের মনোনয়ন প্রত্যাশী কাউকে পাওয়া যায়নি। যদিও কেন্দ্রীয় বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অনেকেই চেয়ারম্যান পদে ভেতরে ভেতরে প্রার্থিতা ঘোষণা করলেও নির্বাচনের মাঠে তৎপর নয়। বরং ফাইনাল সংকেত পেয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি রাখছেন।

জনশ্রুতি আছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদের নির্বাচনের মহড়া অনেকটা হয়ে গেছে। তবুও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে চলছে স্নায়ু যুদ্ধ। চালাচালি হচ্ছে পক্ষে বিপক্ষে নানান কথা ও শেষ রাজনৈতিক কৌশল। উপজেলার ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের সবার মূল উদ্দেশ্য শুধু দলীয় মনোনয়ন লাভ করা। এখন ক্ষমতাসীন দলের দলীয় মনোনয়ন জাদুর কাঠি, তাহলে সব খেলার কেল্লাফতে।

বিজ্ঞাপন

কারণ স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন মহল মনে করেন, সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় উপজেলা নির্বাচনে সরকারি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করেছেন। ভোটাররাও অনুমান করতে পেরেছেন কার উদ্দেশ্য কি? সংসদ নির্বাচনে তৃণমূলে দলীয় কার্যক্রমে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কৌশলী ছিলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষায়। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাঠে নেই কোন বিরোধী দল। এখানে ভোটের খেলায় শুধু ফ্যাক্টর দলীয় মনোনয়ন। এ লড়াই হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে শুধু নিজেরা নিজেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক সিনিয়র নেতা জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা তার শরীকদলের নেতাকর্মীদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। বরং আমরা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নার্ভাস ও ভীতিগ্রস্ত। জাতীয়ভাবে আমাদের দল কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, সে ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ভূমিকা থাকবে।

তবে নির্বাচনের এ আমেজ শুধু ক্ষমতাসীন দলের দলীয় মনোনয়ন লাভের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, একটি সূত্র দাবি করেন, ভোটের মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থীও থাকার আশঙ্কা রয়েছে। যার প্রকৃত সত্যতা যাচাইয়ে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় রয়েছেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খাঁন, বসুরহাট পৌরসভা আ’লীগের সভাপতি রেয়াজুল হক লিটন, নোয়াখালী জেলা আ’লীগের শিল্পও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল হক নাজিম, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আ’লীগের সদস্য গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল। এ ছাড়া একাধিক প্রার্থীর নাম আসছে রাজনৈতিক আড্ডার টেবিলে, চায়ের আড্ডায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক গোলাম সরওয়ার জানান, বিএনপি-জামায়াত ভোটে না আসলে ভোটের হিসাব নিকাশ ও সমীকরণ শতভাগ ভিন্ন হবে।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল ক্ষমতাসীন দলের হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত হলেও চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন এবং আঞ্চলিকতার সমীকরণে এটি পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় আছেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এডভোকেট শাহীদুর রহমান তুহিন।

এখানে ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদেও থাকছে রাজনৈতিক ধোঁয়াশার সমীকরণ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বলে দিবে পুরান থাকছে না নতুন আসছে। এ বিষয়ে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভিন রুনু জানান, এটি দলের বিষয়, অপেক্ষা করুন, উপযুক্ত সময় হোক।