৭৫ পয়সায় দায়সারা আমন্ত্রণ পত্র
আগামী ৮ মার্চ সারা বিশ্বে পালিত হবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটিকে ঘিরে বাংলাদেশ সরকারও আয়োজন করেছে নানা কর্মসূচি। তারই ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর আগামী ৭ ও ৮ মার্চ দুই দিনব্যাপী আয়োজন করেছে মানববন্ধন ও নারী উন্নয়ন মেলার।
মানববন্ধন ও নারী উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণের জন্য বালিয়াকান্দি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তহমিদা খানম একটি আমন্ত্রণ পত্র তৈরি করেছেন। যার খরচ হয়েছে মাত্র ৭৫ পয়সা। পর্যাপ্ত সরকারি বরাদ্ধ থাকার পরেও এ ধরণের আমন্ত্রণ পত্র প্রদান করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল।
আমন্ত্রণ পত্রটি মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১২ টায় বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রেসক্লাবে পৌঁছালে ক্লাবে কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
একটি সাধারণ সাদা কাগজে কম্পিউটার কম্পোজ করে সেটি ফটোকপি করা হয়। ফটোকপির অর্ধেক অংশ আবার বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়।
বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সংবাদদাতা রঘুনন্দন সিকদার বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৯ উপলক্ষে একটি আমন্ত্রণ পত্র পেয়েছি। যেটি তিনি ফটোকপি করে তার আবার দুই ভাগ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে মাত্র ৭৫ পয়সা। অথচ অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকার পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্ধ দিয়েছে। কিন্তু তিনি কোন বিবেক নিয়ে এ ধরনের একটি আমন্ত্রণ পত্র সবার মাঝে প্রদান করছেন তা আমার বোধগম্য নয়।’
ডিবিসি নিউজের রাজবাড়ী প্রতিনিধি দেবাশীষ বিশ্বাস বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে উপজেলা পর্যায়ে এমন আমন্ত্রণ পত্র সত্যি দু:খজনক। এতে বর্তমান নারী বান্ধব সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বালিয়াকান্দি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তহমিদা খানম বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের সরকারি বরাদ্ধ খুবই সামান্য। এসময় তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন- মাত্র ৪ হাজার টাকা দিয়ে কী হয়? আমরা অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য আরও ভুর্তকি দেই।’
একটি ফটোকপি করে তার আবার অর্ধেক করে আমন্ত্রণ পত্র দেওয়ার ব্যাপারে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস বার্তা ২৪. কমকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দু:খজনক। আমি এখনি বালিয়াকান্দি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে কথা বলছি। এই অনুষ্ঠানে সরকারি কোন বরাদ্ধ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, অবশ্যই আছে। তাও আবার পর্যাপ্ত। উপজেলা পর্যায়ে এই অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করার জন্য ১৮ হাজার টাকা বরাদ্ধ রয়েছে। তিনি কেন ৪ হাজার টাকার কথা বললেন তা আমার বোধগম্য নয়।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম রেজা বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘একটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র এ ধরণের হওয়াটা খুবই দু:খজনক। বিষয়টি আমি এখনই খতিয়ে দেখছি।’