চলনবিল এলাকায় সরিষার বাম্পার ফলন

  • রানা আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, সিরাজগঞ্জ, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে চলনবিলাঞ্চলের আট উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনে পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। তবে আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় ক্ষেতে থেকে বাজারে গিয়ে কিছুটা হতাশ হচ্ছেন তারা।

এ অঞ্চলে সরিষা আবাদের লাভের টাকা দিয়ে ইরি ধানের আবাদ করেন কৃষকেরা। কিন্তু সরিষার দাম মনমতো না পাচ্ছেন বলে চলতি ইরি-বোরোর আবাদ করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

গত শনিবার (৩০ মার্চ) সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা, নিমগাছি, সলঙ্গা, বোয়ালিয়া, হান্ডিয়াল, চাচখৈড়, নওগা ও রণবাঘা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, হাটে প্রতি মণ সরিষা এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কৃষকেরা জানান, এদামে সরিষা বিক্রি করে কোনো রকম পিঠ বাঁচলেও তেমন লাভ হচ্ছে না।

তাড়াশ উপজেলার কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানান, এ বছর বারি-১৪, ১৫ ও টরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। তবে কিছু স্থানে দেশীয় জাতের সরিষারও আবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘায় বারি-১৪, ১৫ সাড়ে ৬ থেকে ৭ মণ, টরি-সেভেন ৫ থেকে ৬ মণ এবং দেশীয় জাতের সরিষা প্রায় ৩ মণ হারে উৎপাদন হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া গ্রামের কৃষক কালাম হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বপন থেকে তোলা মাড়াই পর্যন্ত সার, বিষ ও সেচসহ সরিষার আবাদে তার প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। বর্তমান বাজার মূল্যে সামান্য কিছু লাভ হলেও আশানুরূপ লাভ হচ্ছে না তাদের।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইতালি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরিষা আবাদের লাভের টাকা দিয়েই আমরা ইরি আবাদের খরচ চালাই; কিন্তু বর্তমান বাজারে সরিষার দাম কম হওয়ায় ইরি আবাদের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।

রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার নাজমুল মন্ডল বার্তা২৪.কমকে বলেন, উৎপাদন খরচের তুলনায় সরিষার দাম একটু কম হয়েছে। প্রতি মণ সরিষা এক হাজার ৯০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হলে কৃষক অধিক লাভবান হতেন। ইরি আবাদে কৃষক সরিষা আবাদের লাভের টাকা বিনিয়োগ করতে পারতেন।

উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে চলনবিল সংলগ্ন আট উপজেলায় ৫১ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে রায়গঞ্জ উপজেলায় ৯৫০ হেক্টর, তাড়াশ উপজেলায় ৬ হাজার ১১০ হেক্টর, উল্লাপাড়া উপজেলায় ১৮ হাজার ২৭০ হেক্টর, শাহজাদপুর উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় ৭৫৫ হেক্টর, সিংড়া উপজেলায় ২ হাজার ৮০০ হেক্টর, পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ৫ হাজার ১০০ হেক্টর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৫ হাজার ৩৯৬ মেট্রিকটন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।