‘এ রকম এক-আধটু জায়গা সবাই দখল করে’

  • রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ), বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

গৌরীপুর রেলওয়ের সরকারি জমিতে মাটি ভরাট করে দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) সহকারী এসেসর আসাদুজ্জামান রমেন্সের বিরুদ্ধে। চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুর দিক থেকে গৌরীপুর পৌর শহরের বাড়িওয়ালাপাড়া সংলগ্ন রেলওয়ে কোয়ার্টার এলাকার একটি ডোবায় মাটি ফেলে ভরাটের কাজ শুরু করেন মসিকের ওই কর্মচারী।

অভিযোগ আছে, গৌরীপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগসাজশে ইতোমধ্যে মাটি ফেলে প্রায় ত্রিশ লাখ টাকার জমি দখল করা হয়েছে। প্রকাশ্যে মাটি ফেলে এভাবে রেলওয়ের জায়গা দখল করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভরাটকৃত মাটি উচ্ছেদ কিংবা দখলদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানায়, জমি দখলের খবর পেয়ে রেলওয়ের পুলিশ মাটি ভরাট করতে বাধা দিলে কাজ সাময়িক বন্ধ থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলামের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে পুনরায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেন আসাদুজ্জামান।

স্থানীয় ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের ১শ গজ পূর্ব দিকে বাড়িওয়ালাপাড়ায় মসিক কর্মচারী আসাদুজ্জামানের কয়েক শতক জায়গা রয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে নিজের ওই জায়গা ঘেঁষা রেলওয়ের একটি ডোবায় মাটি ফেলে ভরাট কাজ শুরু করেন। দখলকৃত ওই জায়গায় মাটি ভরাট করতে গিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দার ব্যক্তিগত জমির বাঁশঝাড় কেটেছেন মসিকের ওই কর্মচারী।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আসাদুজ্জামান তার জমি ঘেঁষে রেলওয়ের ডোবার দুপাশে মাটি ফেলে অনেকাংশ দখল করেছেন। অবৈধ ভাবে মাটি ভরাট করে রেলওয়ের জায়গায় উঁচু করে রাস্তা নির্মাণের কারণে অনেকের বাড়ির প্রবেশপথও বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীদের অভিযোগ, রেলওয়ের ডোবার এক কোটি টাকা মূল্যের কয়েক কাঠা জমি দখল করার পরিকল্পনা নিয়ে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছেন আসাদুজ্জামান। ইতোমধ্যে লাখ টাকার মাটি ভরাট করে এক কাঠা জায়গা দখল করা হয়েছে। অবৈধভাবে মাটি ভরাট করায় ডোবার পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আসছে বর্ষায় এখানে জলাবদ্ধতা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রমেন্স নামে এক লোক মাটি ভরাট করে রেলওয়ের জায়গা দখল করছে জেনে আমি পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেই। পরবর্তীতে আবার ভরাট কাজ শুরু হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আর তার সঙ্গে আমার কোনো আঁতাত হয়নি।’

আসাদুজ্জামান রমেন্স বলেন, ‘আমি জায়গা দখল করিনি। জনগণের স্বার্থে মাটি ফেলে রাস্তা করে দিয়েছি।’

মাটি ভরাটে পুলিশ বাধা দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ আমাকে বাধা দেয়নি। আর এ রকম এক-আধটু জায়গা সবাই দখল করে।’

এদিকে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সুকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘রেলওয়ের জায়গা দখলের বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমাদের লোকজন বাধা দিয়ে মাটি ভরাট কাজ বন্ধ রেখেছে। তারপরও কেউ যদি জোর করে জায়গা দখল করে, আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

অপরদিকে মুঠোফোনে ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের এস্টেট অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি রেলওয়ের প্রকৌশলী ম্যানেজ হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।’

এ সময় এ প্রতিবেদক এস্টেট অফিসারের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি দখলদারের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেব, পত্রিকায় আমার রেফারেন্স দেয়ার দরকার নেই।’