মাঠ জুড়ে সবুজ আর হলুদের সমারোহ
বগুড়ার মাঠ জুড়ে রয়েছে সবুজের সমারোহ। কোথাও আবার সবুজের সঙ্গে হলুদ রঙের ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। গত কয়েক দিনের বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষক কিছুটা শঙ্কিত হলেও এখন তারা ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
জানা গেছে, সার-বীজ, কীটনাশক ছাড়াও সেচ সুবিধা সহজলভ্য হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই কৃষক তাদের জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ করে। এবার খরা এবং অনাবৃষ্টি না থাকায় সময় মতো ধানের শীষ বের হয়।
কৃষকরা জানায়, অনাবৃষ্টি হলে ধানের শীষ বের হওয়ার সময় জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। কিন্তু এবার পোকার আক্রমণ নেই। পাশাপাশি সময় মতো বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ধান গাছে চিটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই তারা এবার বাম্পার ফলনের আশা করছে। তবে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন এলাকায় শীলা বৃষ্টি হলেও ধানের তেমন ক্ষতি হয়নি।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সারটিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বার্তা২৪.কমকে জানান, শীত মৌসুমে জমিতে আলু চাষ করেও বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি। আলু উত্তোলনের পরপরই সেই জমিতে ধান চাষ করেছেন।
তিনি আরও জানান, বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধান পাকতে শুরু করবে। ওই সময় ঝড় এবং শীলা বৃষ্টি না হলে ধানের কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর গ্রামের কৃষক মামুন ৫৫ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত কোনো রোগবালাই এবং পোকার আক্রমণ দেখা যায়নি। ফলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।
মামুনের মতো এই অঞ্চলের কৃষকরা বিআর-২৮, বিআর-২৯ ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল জাতের বিআর-৫৮ ধানের চাষ করেছেন। কৃষক আজমল, আবু জাফর বার্তা২৪.কমকে জানান, এসব জাতের ধান প্রকার ভেদে বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ৪০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়। তবে ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে রয়েছে কিছুটা শঙ্কা।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস বার্তা২৪.কমকে জানান, চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৭৮১ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষের মধ্যে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।