হবিগঞ্জে ঈদ বাজারে মন্দা, মূলধন ঘাটতির আশঙ্কা!
ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র ক'দিন। প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে হবিগঞ্জে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ বছর ঈদ বাজারে বেশ মন্দা ভাব যাচ্ছে। ফলে মূলধন ঘাটতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের দাবি, এবছর কৃষকরা ধানের দাম না পাওয়ায় ঈদের মার্কেট করতে পারছেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্রেতা সংকটে অলস সময় পার করছেন দোকানিরা। অথচ ঈদের আগে ভালো বেচা-বিক্রির আশায় লাখ লাখ টাকার মালামাল তুলেছেন তারা। প্রতি দোকানেই দেশি-বিদেশি পোশাক ও গহনা তোলা হয়েছে। আর এসব আকর্ষণীয় করে তুলতে লাল-নীল আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও দুর্গা পূজায় বেচাকেনা বেশি হয়। সারা বছর যে পরিমাণ ব্যবসা হয় এসব ঈদ পার্বণে একই পরিমাণ ব্যবসা হয়।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের দাবি, বোরো মৌসুমে চাষিরা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেন। মৌসুম শেষে ফসল বিক্রি করে ওই ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও দাম না পাওয়ায় ধান বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তারা কিভাবে ঈদের কেনাকাটা করবেন।
হবিগঞ্জ শহরের অপরূপা ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী বশিউর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ২০ লাখ টাকার মালামাল তুলেছি। কিন্তু প্রতিদিন ৫/৬ হাজার বেশি বিক্রি করতে পারছি না। ঈদের আগে এর চেয়ে বেশি বিক্রি করতাম। এখন কর্মচারীদের বেতন-বোনাস কিভাবে দেবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।’
ইফাত ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী ইব্রাহীম মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয় করে নতুন এই দোকান চালু করা হয়েছে। কিন্তু বিক্রি খুবই কম।’
শহরের ঘাটিয়া বাজারের মধুমিতা ক্লথ স্টোরের হিসাব কর্মকর্তা বিষ্ণু সরকার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল তোলা হয়েছে। কিন্তু অন্য বছরের তুলনা এবার বিক্রি অনেক কম। ফলে মূলধন ঘাটতিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের।’
হবিগঞ্জে শুধু কাপড়ের দোকান নয়, একই অবস্থা প্রসাধনী ও গহনার দোকানেও। শহরের বগলাবাজার এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনন্দ বণিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ঈদে ভালো ব্যবসা হয়। কিন্তু এ বছর বাজার একদম মন্দা। বেচা-বিক্রি একদম নেই। ঈদের আগেই ব্যবসা ভালো ছিল।’