ঈদে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ
আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল ফিতর। এরই মধ্যে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ি ও শেকড়ের টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবে এখনো সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতগুলোতে ছুটি ঘোষণা না করায় ঈদ যাত্রীদের চাপ তেমন ভাবে শুরু হয়নি। কিন্তু ঈদের আগে নিরাপদে ও কোনো ধরনের ভোগান্তি না পোহাতে অনেকেই তাদের পরিবার-পরিজনকে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাটে। এখনো বেশি ভিড় না হওয়ায় অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি ফিরছে।
সরেজমিনে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে দেখা যায়, একটি লঞ্চে যে পরিমাণ যাত্রী থাকার কথা তার থেকে কিছুটা কমই যাত্রী রয়েছে। আর যারা রয়েছে তারা সবাই ঈদের আগে কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। লঞ্চে কিছুটা ভিড় কম থাকায় যাত্রীরা বেশ আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত।
ঢাকায় কর্মরত একজন ব্যাংকারের স্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘যারা ব্যাংকে চাকরি করেন তাদের ঈদের আগে ছুটি থাকে না বললেই চলে। আর ঈদের একদিন আগে বাড়ি ফেরাটা খুবই কষ্টের। ঘাটে যে পরিমাণ ভিড় হয় তাতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে বেশ বেগ পেতে হয়। তাই এবার ঈদের কয়েকদিন আগেই আমার স্বামী আমাদেরকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। এবার আমরা খুব আরামেই বাড়ি ফিরতে পারলাম।’
এ রকম অনেকেই ঈদের আগে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
তবে এবার ঈদে ঘরমুখো মানুষের দৌলতদিয়া ঘাটে কোনো ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন ও ঘাট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এবার ঈদে যাত্রী পারাপারের জন্য ২০টি ফেরি এরই মধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেগুলো অলরেডি চলতে শুরু করেছে। তাই আমরা আশা করছি এবার ঈদে ঘাটে কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না যাত্রীদের।’
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. নুরুল আনোয়ার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঈদে যাত্রী পারাপারে আমরা ৩৪টি লঞ্চ প্রস্তুত রেখেছি। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে কোনো সমস্যা হবে না।’
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বার্তা২৪.কমকে জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ঘাট এলাকায় ঈদের আগে ও পরে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।
রাজবাড়ীর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হুসাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঘাটে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করছি কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই এবার সবাই ঘরে ফিরতে পারবে।’