দৌলতদিয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
ঈদের আর মাত্র দুই একদিন বাকি। এরই মধ্যে প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই এখন পর্যন্ত নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারছেন যাত্রীরা। তবে ঈদযাত্রায় বাস ও মাহেন্দ্রগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রশাসনের দাবি, পরিবহন মালিক সমিতির সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈঠকে, গত ঈদে যে ভাড়া নেওয়া হয়েছে সেই ভাড়াই নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রী অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোমবার (৩ জুন) সকালে দৌলতদিয়া বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের কাছ থেকে ৪০ টাকার ভাড়ার বদলে চাওয়া হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা। উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়াই দিতে হচ্ছে তাদের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত বাসে ৪০ টাকা, মাহেন্দ্রে ৫০ টাকা এবং ফরিদপুরে বাসভাড়া ৫০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে রাজবাড়ী ৮০ টাকা এবং ফরিদপর ১০০ টাকা। পদ্মা গড়াই বাস সার্ভিস সরাসরি কুষ্টিয়া ছাড়া রাজবাড়ীর কোনো যাত্রী তুলছে না। তুললেও যাত্রীর কাছ থেকে কুষ্টিয়ার ভাড়া ২০০ টাকা নিচ্ছে।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মাগুরার শ্রীপুরের বাসিন্দা মইনুল রানা বার্তা ২৪.কমকে বলেন, প্রতি বছরই ঈদে বাড়ি ফেরার সময় ঘাটে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। কিন্তু এবারই ঘাটের চিত্রটা ভিন্ন। কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই ঘাট পার হতে পেরেছি। কিন্তু ভাড়ার বিষয়টি প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করছে না, না-কি করতে পারছে না, সেটা বুঝতে পারছি না। ৪০ টাকার ভাড়া ৮০ টাকা চাচ্ছে। কী করব! কোনো উপায় নেই। এভাবেই আমাদের যেতে হবে।
ফরিদপুর শহরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে ৫-১০ টাকা ভাড়া বাড়ালে যাত্রীদের তেমন কোনো অভিযোগ থাকতো না। কিন্তু দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে, এটা খুবই দুঃখজনক।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি তাহলে ঘাটে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কাছে অভিযোগ কেন করছেন না, এমন প্রশ্ন করলে উভয়েই বলেন, অনেক দিন পর বাড়ি যাচ্ছি। ঈদে সবার সাথে আনন্দ করব। কে যাবে এই ঝামেলা করতে! ঝামেলা না করে এভাবেই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চলে যায় সবাই।
তবে রাজবাড়ী ডিজেল চালিত অটোরিকশা অটোটেম্পু মালিক সমিতির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকের দাবি, জেলা প্রশাসকের আইনশৃঙ্খলা সভায় যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই ভাড়াই নেওয়াই হচ্ছে। এর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো সুযোগ নেই।
রাজবাড়ীর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হুসাইন বার্তা২৪.কমকে জানান, আইনশৃঙ্খলা সভায় জেলা বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে ভাড়ার ব্যাপারে কথা হয়েছিল এবং তারা বলেছিলেন, গত ঈদে যে ভাড়া নিয়েছে, এবারও সেই ভাড়া নেওয়া হবে। আর ভাড়ার তালিকা নিজ নিজ কাউন্টারে টাঙানো থাকবে।
অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হলে ঘাট কর্তৃপক্ষকে জানালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।