বগুড়ায় থানা হেফাজতে নির্যাতন, চার পুলিশ বরখাস্ত
বগুড়া সদর থানায় হেফাজতে রেখে এক যুবককে নির্যাতনের অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ সুপারের এক আদেশে তিনজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পরে আরও একজনকে বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্তকৃতরা হলেন- বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জব্বার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এরশাদ আলী ও মন্সুী কন্সটেবল এনামুল হক।
পুলিশের নির্যাতনের শিকার সোহান বাবু আদর (৩২) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি শহরের সুলতানগঞ্জ পাড়ার সাইদুর রহমানের ছেলে।
আদর ও তার বড় বোন সম্পা বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত ১০টার দিকে থানার মুন্সি কনস্টেবল এনামুল হক মোবাইল ফোনে আদরকে থানায় আসতে বলে। থানায় গেলে তাকে হাজতে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে তার বোন সম্পা রাতেই থানায় গেলে তাকে জানানো হয়- একই এলাকার সাথী বেগম তার মেয়েকে ইভটিজিং ও পাওনা টাকা না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
আদর বলেন, সেই রাত থেকে শুক্রবার (১৪ জুন) রাত ১১টা পর্যন্ত কনস্টেবল এনামুল এসআই জব্বার এবং অজ্ঞাত একজন তাকে নির্যাতন করে। কখনও ঝুলিয়ে আবার কখনও হ্যান্ডকাফ দিয়ে হাত বেধে নির্যাতন করে। এতে কয়েকবার তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে থানা থেকে তার বাবা ও বোনকে ডেকে আনা হয়। এরপর তাদের কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার রাতেই আদরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানাতে গেলে এসআই জব্বার এবং কনস্টেবল মুন্সী ভয়ভীতি দেখায়। একারণে পরিবারের কেউ রাতে বিষয়টি কাউকে জানাতে পারেননি।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোহান বাবু আদরের সাথে কথা বলেছি এবং ঊর্দ্ধতন কৃর্তপক্ষকে বিষটি জানানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনের নাম আসায় তাদেরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আরো তদন্ত চলছে। আরো কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত থাকায় সন্ধ্যার পর আরো একজনকে সাসপেন্ড করা হয়। তিনি হলেন- সদর থানার সহকারী উপ-পরির্শদক (এএসআই) নিয়ামত উল্লাহ।