চুয়াডাঙ্গা বিএনপি কার্যালয় এখন মুরগীর খাবারের দোকান
বেশ কিছুদিন আগেই কোনো এক রাতের আঁধারে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সাইনবোর্ডটি উধাও হয়ে গেছে। এরপর দীর্ঘদিন কার্যালয়টি বন্ধ থাকার পর গত ৩-৪ দিন আগে জেলা বিএনপির সেই অফিসেই স্থানীয় এক দোকানদার মুরগীর খাবারের দোকান দিয়ে বসেছেন।
বিএনপির কার্যালয়ের হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বুধবার (৭ আগস্ট) সকালে জেলা শহরের নতুন বাজারের অহিদুল ইসলামের বিএনপি অফিসে গেলে কোনো কর্মীকে পাওয়া যায়নি।
জেলা বিএনপি অফিসের আশপাশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, 'অহিদুল ইসলামকে দল থেকে বহিষ্কারের পর তাকে আর অফিসে দেখা যায়নি।' হঠাৎ করে কেন অফিসটি উধাও হয়ে গেল এ বিষয়ে কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেনি জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতারাও।
জেলা বিএনপির অফিস কেন এখন মুরগীর খাবারের দোকান এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন কথা বলেননি দলটির সাবেক আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠজনরা। এই অফিসে বসেই বিএনপির সকল কার্যক্রম চালাত জেলা বিএনপির সাবেক এ আহ্বায়ক।
তবে বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে বাবু খানকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্র থেকে এমন ঘোষণা দেওয়ার পরপরই বিএনপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন আহিদুল ইসলাম। তিনি ঘোষণা দেন, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আর জড়িত হবেন না। ঐদিনই সন্ধ্যায় বন্ধ করে দেয়া হয় অহিদুল ইসলামের বিএনপি কার্যালয়টি।
অহিদুল বিশ্বাসের অনুসারীরা বলছেন, দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পরই অভিমান আর কষ্টে অফিস ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে মনে প্রাণে এখনো তিনি বিএিনপির রাজনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, চুয়াডাঙ্গা বিএনপির রাজনীতির গ্রুপিং রয়েছে। অভিভাবকহীন আর গ্রপিংয়ের কারণে দলীয় সব অনুষ্ঠান করা হয় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কোন্দলের কারণে জেলা বিএনপির কার্যক্রম হয়ে পড়েছে অনেকটা দুর্বল।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা বিএনপির আহ্বায়ক থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এমনকি তার ন্যূনতম বিএনপির সদস্য পদও এখন নেই। সুতরাং তিনি বিএনপির কোনো কর্মীও নন।'
বিএনপির অফিসের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির কোনো কোন্দল নেই। আর অহিদুল ইসলাম যে অফিসে বসে বিএনপির কার্যক্রম চালাত সেটি জেলা বিএনপির কোনো অফিস নয়। সেটি ছিল তার নিজস্ব অফিস।'
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মাহমুদুল হাসান খান বাবু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে গত ২ এপ্রিল কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে তার সাধারণ সদস্য পদ এখনও আছে কিনা এ বিষয়ে কিছুই জানা নেই। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় জেলা বিএনপির কোনো অফিস নেই। তবে অনেকে ব্যক্তিগত অফিস নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে বসলেও সেটি বিএনপির কোনো দলীয় কার্যালয় নয়।'