দৌলতদিয়ায় নদী পারের অপেক্ষায় সহস্রাধিক যান
বৈরী আবহাওয়া, তীব্র স্রোত আর ফেরি স্বল্পতার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় সহস্রাধিক যানবাহন। এর মধ্যে পশুবাহী ট্রাক রয়েছে তিন শতাধিক। সময় মতো গরুগুলো হাটে তুলতে না পারায় মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে গরু ব্যবসায়ীরা।
স্বাভাবিক সময়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে। ঈদের সময় সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ। অথচ ঘাট কর্তৃপক্ষ সে তুলনায় ফেরির সংখ্যা বাড়ায় না। এরমধ্যেও অনেক ফেরি নষ্ট হয়ে ঘাটে বসে থাকে।
বর্তমানে এ রুটে ১৯টি ফেরির মধ্যে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। দুটি ফেরি নষ্ট হয়ে ঘাটে বসে আছে। এতো অল্প ফেরি দিয়ে ঘাটের যানজট নিরসন সম্ভব নয় বলে অভিযোগ যাত্রী ও চালকদের।
তবে বিআইডব্লিউটিসি বলছে- যথেষ্ট ফেরি রয়েছে। এক সঙ্গে অনেক গাড়ি আসায় চাপ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে দেখা যায়, দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে খানখানাপুর ছোট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার নদী পারের জন্য ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে প্রায় সহস্রাধিক গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে। এর মধ্যে গরুর গাড়ি রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩০০ এর মতো। সময় মতো গরুগুলো হাটে তুলতে না পারায় অনেক ব্যবসায়ী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মাগুরা থেকে আসা গরুব্যবসায়ী রহমত আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ঘাট কর্তৃপক্ষের মাথায় কোনো বুদ্ধি নেই। তারা জানে না কোরবানি ঈদের আগে ঘাটে অতিরিক্ত গরুর গাড়ির চাপ থাকে। তারা কেন আগে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এখন আমাদের যে ক্ষতি হবে তা কে দেবে?’
কুষ্টিায়া থেকে আসা আরেক গরু ব্যবসায়ী সালাম মোল্লা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে এখানে এসেছি। অথচ এখনো ঘাট থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পড়ে আছি। ঘাটের যে অবস্থা তাতে আজ নদী পার হতে পারব কিনা জানি না।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এখানে কোনো ফেরির স্বল্পতা নেই। তীব্র স্রোত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফেরিগুলো ঠিক মতো চলতে পারছে না। স্বাভাবিক সময় থেকে দ্বিগুণ সময় লাগায় ফেরির টিপ সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া এক সঙ্গে অনেক গাড়ি প্রবেশ করায় ঘাটে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।’
১৭টি ফেরি দিয়ে এতো গুরুত্বপূর্ণ নৌরুটে যানবাহন পারাপার সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজকের মধ্যে আরও একটি ফেরি আসবে। আর যে দুটি ফেরি নষ্ট হয়ে বসে আছে সেগুলোও দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে। আশা করছি ২০টি ফেরি নিয়মিত চলছে আর সমস্যা হবে না।’