সিরাজগঞ্জে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সেবার সংকট

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, সিরাজগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ওয়ার্ডে সিট না পেয়ে হাসপাতালের গলিতে অবস্থান করছেন রোগীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ওয়ার্ডে সিট না পেয়ে হাসপাতালের গলিতে অবস্থান করছেন রোগীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সিরাজগঞ্জে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলছে। ঢাকা থেকে আসা রোগীর পাশাপাশি জেলায় এডিস মশা ও লার্ভা থাকায় প্রতিদিন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শুরু করে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা সেবার বেহালদশা। এছাড়া পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ এডিস মশা নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/21/1566395186772.jpg

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গত ২৫ এপ্রিল থেকে সিরাজগঞ্জে ডেঙ্গু রোগী শনাক্তকরণ শুরু হয়। প্রায় তিন সপ্তাহে জেলায় ৪৬৬জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্তকরণ হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট মেহেদী হাসান মীম নামে এক কলেজছাত্র একটি সরকারি হাসপাতালে মারা গেছে। সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় স্থানানন্তর করা হয়েছে। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।

এদিকে, প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বাড়লেও জেলায় তেমন কোনো প্রতিরোধে কর্মসূচি পালন হচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে দু-একটি র‌্যালি, ব্যানার ও লিফলেটসহ স্কুল কলেজে কয়েকটি সমাবেশের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে, প্রতিদিনই ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায় থেকে ডেঙ্গু রোগী বাড়লেও প্রতিরোধে নেই কোনো তৎপরতা। শুধু সিরাজগঞ্জের পৌরসভাগুলোতে মশক নিধন স্প্রে করা হচ্ছে। তাও প্রতিটি ওয়ার্ডে স্পে করা হচ্ছে না। এছাড়া সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার সুব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালের বাইরে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। এমনকি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য স্যালাইনের সংকট রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/21/1566395204617.jpg

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী সোলায়মান হোসেনসহ অনেকে জানান, হাসপাতালে আসার পরই একটি স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করতে বলা হয়। পরীক্ষার ফলাফলের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রোগীদের অভিযোগ, শুধু একটি করে ট্যাবলেট দেওয়া হয়। এছাড়া স্যালাইন বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতালের নার্সরাও চিকিৎসা সেবা দিতে দুর্ব্যবহার করেন। চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। এ কারণে অনেকে হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। ডেঙ্গুর পরীক্ষার কীট বা ওষুধের সংকট নেই। তবে রোগীরা কেন বাইরে থেকে পরীক্ষা করছে সেটি আমার জানা নেই।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/21/1566395217649.jpg

সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা.জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সমাজের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সবাই সর্তক থাকলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব।’

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে র‌্যালি- সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ পৌর এলাকায় মশক নিধনে স্প্রেসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মশা নিধনে স্প্রের অর্থ বরাদ্দ না থাকায় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সচেতনামূলক সভা করা হয়েছে।’