রেশমের ন্যায্যমূল্য পেয়ে খুশি চাঁপাইয়ের চাষিরা

  • ডিষ্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

রেশম চাষি সমরুদ্দিন পারিবারিকভাবেই রেশম চাষের সঙ্গে জড়িত। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন উপজেলার চরধরমপুর গ্রামে। এ বছর রেশমের চাষ ভালো হওয়ায় রেশম চাষে আগ্রহ বাড়ছে নতুন চাষিদের, ফিরছে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা বলে জানান তিনি।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ফলন ভালো হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রেশম গুটি বস্তায় ভরছেন তিনি।

সমরুদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রেশম চাষ করলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তেমন লাভের মুখ দেখেননি। তারপরও ফিরে আসেননি রেশম চাষ থেকে। পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে লোকসানের পরেও চাষ করেছেন রেশম। বর্তমানে রেশমের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় খুশি তিনি ও তার পরিবার।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সার্বিক সহায়তায় ভোলাহাট উপজেলার ১৬০ জন রেশম চাষি রেশমের বাম্পার ফলন ও ন্যায্য মূল্য পেতে শুরু করেছেন। কারণ রেশম বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রেশম চাষিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। এছাড়া সার্বিক সুযোগ-সুবিধাও দিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও রেশম বোর্ড বর্তমানে জীবাণুমুক্ত ডিম সরবরাহ করছে। সে ডিম থেকে এক বছরে ৪টি বন্দ অগ্রণী, চৈয়তা, জৈষ্ঠি ও ভাদরি বন্দে রেশমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন চাষিরা। ৪টি বন্দে ১০০ ডিমে আগে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ কেজি ফলন হত। আর এখন ১০০ ডিমে ৯০-৯৫ কেজি ফলন পাওয়া যাচ্ছে।

রেশমের বাজার দর নিয়ে তিনি বলেন, আগে প্রতি মণ ছিল মাত্র ৮-৯ হাজার টাকা, এখন দাম বেড়ে হয়েছে ১৪-১৫ হাজার টাকা। ফলে সব মিলিয়ে রেশম চাষিদের রেশম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। পুরাতন ১৬০ জন চাষি রেশমের ফলন ও দাম পেয়ে পরিবারে যেমন সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন তেমনি রেশম চাষে আগ্রহ বাড়ছে নতুন চাষিদের।

নতুন রেশম চাষিদের মাঝে উন্নতমানের তুঁত চারা সরবরাহসহ আর্থিক সহায়তা দিলে রেশম চাষ পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলে জানান সমরুদ্দিন।

চরধরমপুর গ্রামের রেশম চাষি বজলুর রশিদ, সায়েদা খাতুন, ধরমপুর গ্রামের তোফাজ্জুল হক, বজরাটেক গ্রামের হামিদুল বলেন, রেশমের বাম্পার ফলনে তাদের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে শিক্ষিত করার সুযোগ পাচ্ছেন।

ভোলাহাট রেশম বোর্ড ফার্ম ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, জীবাণুমুক্ত ডিম সরবরাহ, নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান ও বাড়িতে গিয়ে পরামর্শ দেয়ার কারণে রেশমের বাম্পার ফলন হয়েছে। রেশম চাষিদের এমন সহায়তা বজায় থাকলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে রেশমের পূর্বের ঐতিহ্য। 

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ভোলাহা রেশম বোর্ডের নিজস্ব ৬৭ বিঘা জমিতে রেশম চাষ হয়েছে। উপজেলায় চাষ হয়েছে ২১৭ বিঘা জমিতে।