বুড়িমারী স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ
সড়ক সংস্কারের দাবিতে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার আব্দুস সালাম।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পাটগ্রামের ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে উভয় দেশের ট্রাক প্রায় সময় বিকল হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাই দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিল ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ।
পরে সরকার সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় প্রায় ৩০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়। ১৮ ফুট প্রস্থের মহাসড়কটির দু’পাশে ৫ ফুট করে মোট ১০ ফুট সম্প্রসারণ করা হবে। ফলে ২৮ ফুট প্রস্থ করা হবে সড়কটির ১০ কিলোমিটার অংশে। যার প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি টাকা। কিন্তু দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ হলেও কাজ শুরু হতে বিলম্ব করায় ফুঁসে ওঠে ব্যবসায়ীরা।
তাই দ্রুত কাজ শুরুর দাবিতে গত সপ্তাহে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা আলোচনা করে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ব্যবসায়ীদের আন্দোলন ঘোষণার পরপরই তড়িঘড়ি করে সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করতে মাঠে নেমে পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যদিও সড়কে কাজ শুরু হয়নি। কিন্তু সংস্কারের জন্য মালামাল সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। এরপরও পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার থেকে বন্দরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা।
বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী তারেক ইসলাম জানান, সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হলেও অহেতুক রাজনৈতিক স্ট্যান্ড নিতেই ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চাঁদাবাজ এ সিন্ডিকেটটির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
বুড়িমারী অভিবাসন পুলিশের (ইমিগ্রেশন) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) খন্দকার মাহমুদ জানান, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও চালু আছে পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল কার্যক্রম।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং লালমনিরহাটের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আলী নূরায়েন জানান, দরপত্র আহ্বান ও ঠিকাদার নিয়োগ শেষে বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়কের ১০ কিলোমিটার অংশে সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়ে গেছে। তবে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখাটা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিষয় বলেও দাবি করেন তিনি।
বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (এসি) আব্দুস সালাম জানান, কাস্টমসের কার্যালয় খোলা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা আমদানি-রফতানি বন্ধ রেখেছে। ব্যবসায়ীদের পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে কতদিন আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।