ভারতে পেঁয়াজের রফতানি মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব বেনাপোল বন্দরে

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, বেনাপোল(যশোর)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ভারত সরকার পেঁয়াজের রফতানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৮৫৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করায় তার প্রভাব পড়েছে বেনাপোল বন্দরে। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ পড়ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা। আর পাইকারি বাজারে সেটা বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা দরে। আর খুচরা বাজারে সেই পেঁয়াজের দাম ৫৭ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেনাপোল বন্দর ঘুরে এই তথ্য পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

গত দুই দিন আগেও প্রতি মে.টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৪১০ মার্কিন ডলারে। সে সময় কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা।

বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করতেই পেঁয়াজ আমদানিতে মূল্য দ্বিগুণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। তবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, ভারতে পেঁয়াজ সঙ্কটের কারণে রফতানি মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মধুমিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী রেজাউল হোসেন ফোনে বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান, বন্যার কারণে গত ১ মাসের ব্যবধানে ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সে সময় পেঁয়াজ রফতানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ভারতের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাজারে পেঁয়াজের মূল্য সহনশীল রাখতেই রফতানি মূল্য বাড়ানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দুই দিন আগে দিল্লী থেকে পেট্রাপোল কাস্টমসে পাঠানো ফ্যাক্স বার্তায় পেঁয়াজের রফতানি মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি জানানো হয়। সেখানে বলা ছিল, 'এখন থেকে পেঁয়াজের কোনো চালান দেশের বাইরে রফতানি করতে হলে বর্তমানে নির্ধারণ করা ৮৫৫ মার্কিন ডলারে কার্যকর হবে।'

বেনাপোল বন্দরের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজ ভারত থেকে প্রতি মে.টন ৮৫৫ ডলার মূল্যে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ১২২ মে.টন পেঁয়াজ আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি জনি ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান, ভারতে বন্যার কারণে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে পেঁয়াজ আমদানি হতো নাসিক থেকে। সেখানে বন্যার কারণে এখন আমদানি হচ্ছে সাউথ (দক্ষিণ) থেকে। পরিবহন খরচ ও ক্রয় মূল্য বেশি পড়ে যাওয়ায় সেখানে দাম বেড়েছে। বেনাপোল বন্দর পর্যন্ত আমদানি খরচ পড়ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা। খুলনায় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা দরে। পেঁয়াজের চাহিদা থাকায় তারা বেশি মূল্য দিয়েও আমদানি করছেন।

সাধারণ ক্রেতা মাসুদুর রহমান জানান, তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে প্রায় দশ টাকা। এত দামে পেঁয়াজ ক্রয় করা সাধারণ মানুষের পক্ষে কষ্টকর।

বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী উজ্জল বিশ্বাস জানান, ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করতেই কৌশল হিসাবে রফতানি মূল্য দ্বিগুণ করেছে। এমন চলতে থাকলে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকবে। তবে সে দেশের সরকার যদি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তবে বাজার মূল্য আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত থেকে ১ হাজার ১১৯ মে.টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। মূল্য বৃদ্ধির পর পেঁয়াজ আমদানি কিছুটা কমে গেছে।