ব্যাগ ও কার্টন তৈরি করে স্বাবলম্বী শিবচরের লাবনী
শপিং ব্যাগ আর মিষ্টির কার্টন তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন শিবচরের লাবনী। কার্টন তৈরিকে পেশা হিসেবে নিয়ে দূর করেছেন পারিবারিক দারিদ্র্য। স্বামী-সন্তান নিয়ে এখন বেশ সুখেই আছেন তিনি।
লাবনী শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী শাহীন পাটোয়ারী। দুই বছর আগে শিবচর বাজারের পৌর মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কাপড়ের শপিং ব্যাগ বানাতে শুরু করেন তারা। পরবর্তীতে চাহিদা বাড়ায় ব্যাগের পাশাপাশি মিষ্টির কার্টন বানানো শুরু করেন। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে তাদের ব্যবসা বেশ বড় হয়ে যায়।
প্রায় এক বছর ধরে শিবচর উপজেলার শিবচর ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামে নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন কারখানা। বর্তমানে এ কারখানায় ১০টি মেশিনে উৎপাদন করা হয় এবং ৮ জন কর্মচারী কাজ করেন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কারখানায় লাবনী ও তার কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। শ্রমিকরা কাপড় কাটা, সেলাই, কার্টন বাজারজাত করতে গাঁট্টি বাঁধার কাজ করছেন। আবার অনেকে পাইকারি ক্রেতাদের সাথে কথা বলছেন।
লাবনীর স্বামী শাহীন পাটোয়ারী জানান, বর্তমানে কাজের অনেক চাপ। তাছাড়া দুজন কারিগর ছুটিতে থাকায় কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে। বর্তমানে তাদের খাওয়ারও সময় নেই।
লাবনী জানান, তাদের তৈরি কাপড়ের ব্যাগ ও কার্টন জেলার চারটি উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও শরীয়তপুর জেলায় বিক্রি হয়। দোকান মালিকদের চাহিদামতো লেভেল লাগিয়ে তারা ব্যাগ ও কার্টন তৈরি করেন। ব্যাগ তৈরির কাপড়, আঠা, কাগজ, রঙ, কালি, পিনসহ যাবতীয় উপকরণ ঢাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়।
তিনি আরো জানান, প্রতিটি শপিং ব্যাগ তৈরি করতে খরচ হয় ৭-৮ টাকা। আর কার্টন তৈরিতে খরচ হয় ৮-৯ টাকা। আর প্রতিটি ব্যাগ বিক্রি হয় ১০ টাকায় এবং কার্টন ১১-১২ টাকায়। প্রতি মাসে তারা ৫৫-৬০ হাজার শপিং ব্যাগ ও কার্টন তৈরি করেন।
এই নারী উদ্যোক্ত জানান, টানাপোড়েন আর অভাবের সংসারে এক সময় খুব কষ্ট করে চলতেন। নিজ উদ্যেগে মিষ্টির কার্টন ও শপিং ব্যাগ তৈরি শুরু করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
শিবচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজন মাদবর বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘লাবনী ব্যাগ ও কার্টন তৈরি করে বেশ ভালো আছেন। সরকার তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা দিলে তারা আরো ভালো করবে।’