কিশোর গ্যাংয়ের দখলে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস
পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একাধিক কিশোর গ্যাং। এসব গ্যাং সদস্যরা কলেজ চলাকালীন ক্যাম্পাসে বেপরোয়া মোটরসাইকেল শো-ডাউনের পাশাপাশি রাত নামতেই শুরু করে মাদকের আসর। এছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোবাইল মানিব্যাগ কেড়ে নেয়া কিংবা বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আছে।
১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত পটুয়াখালী সরকারি কলেজ। বর্তমানে এই কলেজে ১৬টি বিভাগে অনার্স-মাস্টার্সের পাশাপাশি ইন্টারমিডিয়েট এবং ডিগ্রি কোর্সে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। গত কয়েকবছর থেকে এ কলেজকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বহিরাগতরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। শুধু কলেজ ক্যাম্পাসে নয় এর বাইরেও হামলা কিংবা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা। এদেরকে নিয়ন্ত্রণে অনেকটা অসহায় কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাই দিনকে দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন এসব অপরাধীরা।
কলেজের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল শো-ডাউন, ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ কিংবা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার মত ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এখন বিব্রত।
পটুয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদ সচিব মোঃ গাজী জাফর ইকবাল জানান, এ সমস্যার সমাধানে ইতোমধ্যে একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে। তবে এখনও ছাত্র নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বসা হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কলেজে বহিরাগতদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ প্রবণতা কমাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জয়দেব স্বজ্জন বলেন, ‘আমার হাতে তো লাঠি নেই, আমার কাছে আইনও নেই। আমরা বিভিন্ন সময় বহিরাগতদের কলেজ সময়ে প্রবেশ নিষেধ এবং বেপরোয়া মোটরসাইকেল চলাচলে নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিলেও কেউ তা মানছে না। এ নিয়ে জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় পুলিশ সুপার এবং সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে একাধিকবার অবহিত করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।’
তবে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সময় লিখিত অভিযোগ জানায়নি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হয়তো মৌখিকভাবে এসব বিষয় অলোচনা হয়েছে। এরপরও সদর থানা পুলিশ নিজ উদ্যোগে কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য কাজ করছে। এ ছাড়া কলেজ ক্যাম্পাসসহ শহরে মাদক এবং বেপরোয়া মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পটুয়াখালী সরকারি কলেজে বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কলেজ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জেলার রাজনৈতিক নেতাদের উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।