খুলনায় লাগামহীন পেঁয়াজের বাজার

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, খুলনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিটি দোকানেই পেঁয়াজের প্রচুর মজুদ দেখা গেছে

প্রতিটি দোকানেই পেঁয়াজের প্রচুর মজুদ দেখা গেছে

খুলনায় লাগামহীন হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের বাজার। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নগরীর খুচরা বাজারগুলো ঘুরে জানা যায়, অতিরিক্ত দামে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে, এমন খবরেই স্থানীয় মজুদদাররা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাজারে এ কৃত্রিম সংকট তৈরি হলেও নেই কোনো মনিটরিং। এদিকে দাম বৃদ্ধিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত আয়ের ভোক্তারা। পণ্যের বেশি দামের কারণে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তুষ্টি বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, দেশের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় কমছে না দেশি পেঁয়াজের দাম। কিছু অঞ্চলে অতিবৃষ্টি আবার কিছু এলাকায় অনাবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবার সরবরাহ কম হচ্ছে। যে কারণে কমছে না দাম। অপরদিকে ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে বাজারে দাম বাড়তি।

খুলনা নগরীর খুচরা বাজার হিসেবে পরিচিত নিউ মার্কেট কাঁচা বাজার, সান্ধ্যকালীন বাজার, মিস্ত্রীপাড়া কাঁচাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট দেখা যায়নি। পাইকারি থেকে খুচরা প্রতিটি দোকানেই পেঁয়াজের প্রচুর মজুদ দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

নিউ মার্কেটে বাজার করতে আসা চাকরীজীবী আলী আহসান বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অন্যান্য তরিতরকারির দাম কিছুটা নাগালের ভেতরে থাকলেও পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। আমি চাকরীজীবী, তাই মাসে দু’বার বাজারে আসি। এর আগে এ মাসের শুরুর দিকে ৫০ টাকা দরে দেশি পেঁয়াজ কিনেছিলাম। আজ সেই একই পেঁয়াজ ৮৫ টাকা দরে কিনতে হলো। এভাবে চললে তো আমাদের মতো মধ্যম আয়ের মানুষের না খেয়ে থাকতে হবে।

ময়লাপোতা বাজারে পেঁয়াজ কেনার সময় গৃহবধূ হৃতিকা হালদার জানান, গত এক দু’সপ্তাহ ধরে নিয়মিত পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। বাজারের বাইরে মূল্য তালিকা থাকলেও কোনো ব্যবসায়ীই নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না। কিছু জানতে চাইলে তারা বলে, বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হয় তাই বেশি দামে বিক্রি করি। আপনি কিনলে কেনেন, না চাইলে যান। অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে গেলেও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের কোনো মনিটরিং নেই।

এদিকে, কেসিসি সান্ধ্য বাজারের সভাপতি মোজাফফর হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বেশকিছুদিন আগে থেকেই ভারত থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনছে ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া এবছর দেশেও পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়নি। তাই সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী আছে, যারা সুযোগ বুঝে পেঁয়াজের বিপুল পরিমাণ মজুদ করে রাখেন। যখনই দাম বৃদ্ধি পায় বা সংকট তৈরি হয়, তখন অতিরিক্ত মুনাফায় সেগুলো বিক্রি করেন। এসব ব্যবসায়ীদের একটা সিন্ডিকেট আছে। এরা প্রশাসনকেও ম্যানেজ করতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে জেলা বাজার কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।