পুলিশের উপস্থিতিতে ডাকাতির অভিযোগ, পাহারায় এলাকাবাসী
ডাকাতদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর উপজেলার বাসিন্দারা। শিবগঞ্জ উপজেলার আড়গাড়া হাট-বেলালবাজার সড়ক ও কানসাট চৌডালা সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে প্রতিদিনই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।
প্রতিদিন ওই আঞ্চলিক সড়ক দুটি দিয়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই ঘটে বিপত্তি। সড়কগুলোতে বেড়ে যায় ডাকাতদের উৎপাত। ডাকাত বাহিনী প্রধান কারিমুল ইসলাম ওরফে কারেন্ট ডাকাত পুলিশের উপস্থিতিতেই ডাকাতি করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
ভুক্তভোগী রানিবাড়ী চাঁদপুর এলাকার পল্লী চিকিৎসক সোহেল আহমেদ জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তিনি আড়গাড়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে করে চৌডালার দিকে যাচ্ছিলেন। বাজারে পৌঁছালে গোমস্তাপুর থানা পুলিশের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি তার মোটরসাইকেল থামাতে বলেন। সবাই সাদা পোশাকে থাকায় তিনি তাদের ডাকাত মনে করন। তিনি তখন না দাঁড়িয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি হঠাৎ মোটরসাইকেলের সামনে আসলে ধাক্কা লাগে। এসময় পুলিশ এগিয়ে এসে তাকে ধরে থানায় নিয়ে যান। সেখানে উপস্থিত লোকজন আহত ব্যক্তিকে ডাকাত সর্দার কারেন্ট বলে শনাক্ত করেন।
এদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে আড়গাড়া হাট, চাকলা ও বেলাল বাজারের বাসিন্দারা বাঁশের লাঠি নিয়ে বিক্ষোভ করে ও রাত জেগে রাস্তা পাহারা দেন।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে বেশ কিছু ডাকাত মারা গেছে। আবার অনেকে কারাগারে আটক আছে। কারাগারে আটক থাকা ডাকাতরা জামিন নিয়ে আবারও ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়ে। তারা রাতে রাস্তায় মানুষকে মারপিট করে টাকা, মোবাইল ও মোটরসাইকেল ছিনতাই করছে। ডাকাতদের হাত থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছেন না।
ডাকাত সদস্যদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে বিভিন্নভাবে হয়রানির করা হয়। এমনকি বিভিন্ন মামলায় জড়ানো হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, চৌডালা বেলাল বাজারের হুমায়ুন কবিরের ছেলে কারিমুল ইসলাম ওরফে কারেন্ট ডাকাত গত ৭ মার্চ শিবগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক হয়। বেশ কিছুদিন কারাগারে থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
দাইকুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম জুয়েল জানান, ডাকাতির বিষয়টি একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জানানো হয়েছে। পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে বেশ কয়েকজন মারাও গেছে। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না ডাকাতি। ফলে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।
শিবগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'ঘটনাটি আমার জানা ছিল না। ডাকাত নির্মূলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
এদিকে সাদা পোশাকে পুলিশের সঙ্গে থেকে সড়কে ডাকাতির অভিযোগের বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ওসি মো. জসিম উদ্দীন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘পুলিশ ডাকাতি প্রতিরোধে কানসাট সড়কে ডিউটি পালন করে। সেক্ষেত্রে ডাকাত পুলিশের সঙ্গে থাকার কথা নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’