ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সদস্যদের বঞ্চিত করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার খোর্দ্দ মাধাই নগর গ্রামে নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্য চাষ প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সদস্যদের বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ওই প্রকল্পের অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে তারা স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগও করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য অধিদফতরের আওতায় পরিচালিত নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্য চাষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৬৭৪.৭৬ হেক্টর আয়তনের ৭৮৩টি পুকুরে মৎস্য চাষ করা হয়। যার মধ্যে মাধাইনগর ইউনিয়নের খোর্দ্দ মাধাইনগর গ্রামে অবস্থিত ভুরংগি বিল পুকুর একটি।
নীতিমালা অনুযায়ী, পুকুর সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত দরিদ্র মানুষদের নিয়ে একটি সুফল ভোগী দল গঠন এবং ঐ পুকুরে মাছ চাষ করে তাদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি করার কথা। নিয়ম অনুযায়ী ১২ বিঘা আয়তনের ভুরংগি বিল পুকুরের জন্য ৩৬ জনকে সদস্য করা হয়। তাদের মধ্যে ১৭ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্য।
অভিযোগ আছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে ২০১৪ সাল থেকে ১৭ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী (উঁরাও সম্প্রদায়) সদস্যদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তবে অপর ১৯ জন সদস্য মৎস্য অফিসকে ম্যানেজ করে পুকুরটি সাব লিজ দিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী সাব লিজ দেয়া সম্পূর্ণ বেআইনি।
অভিযোগ আছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী মাধাইগর গ্রাম থেকে পাঁচজনকে ঐ দলের সদস্য করা হয়। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যরা সবাই খোর্দ্দ মাধাইনগর গ্রামের বাসিন্দা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুকুরটি সাব লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন পার্শ্ববর্তী রায়গঞ্জ উপজেলার শ্যামেরঘোণ গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আলতাব হোসেন।
দলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্য অখিল চন্দ্র উঁরাও বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমরা এ দেশের নাগরিক নই। বারবার আমাদের পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কিন্তু এটা দেখার কেউ নেই।’
পুকুরটির সুফলভোগী দলের বর্তমান সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদের পরে দলে সংযোজন করা হয়। এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও রয়েছে। তাছাড়া এ টাকা নিয়ে মসজিদের উন্নয়ন করা হয়েছে। তাই তাদের হিস্যা দেয়া হয়নি।’
এবিষয়ে, তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বেশ বিব্রত। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সমস্যাটি ঝুলে আছে। উপজেলা প্রশাসনের উপ-কমিটির সভায়ও বিষয়টি তোলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও সমাধান আসেনি।’