মহানন্দার তীরবর্তী মানুষ ত্রাণ নয়, বাঁধ চায়

  • ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মহানন্দা নদীতে ভাঙন, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

মহানন্দা নদীতে ভাঙন, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত কয়েকদিন ধরেই টানা পানি কমছে মহানন্দা নদীতে। এতে করে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে সদর ও গোমস্তাপুর উপজেলার পাঁচটি পয়েন্টে। গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ী শিরোটোলা মসজিদ পাড়া থেকে দেবীনগর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মহানন্দা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে ২টি ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ফারাক্কার সব ক’টি গেট খুলে দেওয়ার পর হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পায় পদ্মা ও মহানন্দা নদীতে। গড়ে ১২ সেন্টিমিটারের বেশি পানি বাড়তে থাকে নদীতে। এতে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে সদর, শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মানুষ। টানা চারদিন পানি বৃদ্ধির পর আবারও পানি কমতে শুরু করে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীতে শুরু হয়েছে ভাঙন। বিশেষ করে মহানন্দা নদীর পাঁচটি পয়েন্টে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

বিজ্ঞাপন

নয়াদিয়াড়ী এলাকার ৭০ বছর বয়সী মাহাতা খাতুন জানান, ‘আগে হারঘে বাড়ি ছিল লদী (নদী) থেকে অনেক দূরে। একবার লদীতে সব চলে গেছে। এখন যেখানে বাড়ি করেছি, লদী কাটতে কাটতে এখন সেখানে চলে এসেছে। হামরা গরিব মানুষ। এবার লদীতে সব চলে গেলে হারঘে কি হবে। তোমরা হারঘে লদীটা বাইধ্যা দাও।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার জানান, সদর উপজেলার দেবীনগর, কালিনগর এবং গোমস্তাপুর উপজেলার নয়াদিয়াড়ি, চৌডালা, বাঙ্গাবাড়ি, কাশিয়াবাড়ি চলছে নদী ভাঙন। এসব এলাকায় প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি ও আম বাগান। এরই মধ্যে ৫০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে শতাধিক বাড়িঘর ফসলি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গোমস্তাপুরের নয়াদিয়াড়ি এলাকার মানুষ স্থানীয়ভাবে মাটির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

গোমস্তাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জামাল উদ্দিন মন্ডল জানান, গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ীতে ৫০ বছর ধরেই মহানন্দা নদীতে ভাঙন চলছে। সেই সাথে ৫০০ বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। ফলে চরম হুমকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী মানুষ। হুমকির মুখে রয়েছে ২টি মসজিদ ও ৪০টি ওয়াক্তিয়া মসজিদসহ ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রায় ৮ হাজার বাড়ি। তিনি আরো বলেন, উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ভাঙনের বিষয়ে জানানো হলেও কার্যত কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আতিকুর রহমান জানান, গত ৬ দিন ধরে পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি কমতে শুরু করায় কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাবিত এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তবে গোমস্তাপুর ইউনিয়নে ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে ভাঙন প্রতিরোধে।