ফুটওভার ব্রিজ আছে তবুও ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার

  • মাহিদুল মাহিদ, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সামান্য সময় বাঁচাতে নয়তো একটু পরিশ্রম থেকে পরিত্রাণ পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। চরম ঝুঁকিপূর্ণ জানার পরও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে বেশিরভাগ পথচারীরই চরম অনীহা।

পথচারীদের অভিযোগ, এসব ফুটওভার ব্রিজের বেশিরভাগই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাছাড়া রাতের বেলা ভবঘুরে, মাদকাসক্ত ও ভ্রাম্যমাণ পতিতাদের দখলে থাকে। দিনের বেলায়ও অনেক ফুটওভার ব্রিজ ভবঘুরে, মাদকাসক্ত ও হকারদের দখলে থাকে। কোথাও গড়ে উঠেছে অঘোষিত গণশৌচাগার। এছাড়া বিশেষ করে রাতে ছিনতাইকারীরা ওভারব্রিজ ব্যবহারকারী পথচারীদের কাছ থেকে মালামাল ছিনিয়ে নেয়।

বিজ্ঞাপন

সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা এবং বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ১২টি ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে। রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন ফুটওভার ব্রিজ সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি ফুটওভার ব্রিজের সিঁড়ির পাটাতনে মরিচা পড়ে ক্ষয় হয়ে গেছে। পথচারীরা পা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেবে যাচ্ছে সিঁড়ি। মাঝের পাটাতনে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় ফুটো দিয়ে নিচের সড়ক দেখা যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সাভার ও আশুলিয়ায় নির্মিত ১২টি ফুটওভার ব্রিজের মধ্যে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ৭টি, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ৪টি ছাড়াও আরো একটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া টঙ্গী-আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে ১টি ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে। যার মধ্যে সাভারের দুটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১টি ও জিরানি বাজার এলাকার ১টি ফুটওভার ব্রিজ মোটামুটি ব্যবহার হলেও তার আবার অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল করে রয়েছে হকাররা। বাকিগুলো পথচারীরা ব্যবহার করছেন না বললেই চলে।

রাস্তার আইল্যান্ড টপকে পার হচ্ছিলেন সুমন। কথা হলো তার সঙ্গে। তিনি বলেন, এভাবে রাস্তা পার হবার জন্য আমি লজ্জিত। আজ হাতে একটু সময় কম ছিলো তাই এভাবে রাস্তা পার হয়েছি। আর কখনো এভাবে পার হবো না।

একইভাবে রাস্তা পার হওয়া আরিফ বলেন, ফুটওভার ব্রিজে উঠতে সময়টা বেশি লাগে। তাছাড়া হকার, ছিনতাইকারী, পকেটমার নানারকম ঝক্কি ঝামেলা। এভাবে পার হলে কেউতো কিছু বলে না। তাই আইল্যান্ড টপকেই রাস্তা পার হই।

হাতছোঁয়া দূরত্বে ফুটওভার ব্রিজ তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন পোশাক শ্রমিক লিজা। কারণটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে তাই সময় বাঁচাতে এভাবেই রাস্তা পার হচ্ছি। তবে অফিস ছুটি শেষে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করি। কিন্তু সমস্যা হলো ফুটওভার ব্রিজটা পথচারীদের জন্য হলেও জায়গাটা দখল করে রেখেছে হকাররা। ওদের জন্য হাঁটাই যায় না। তাছাড়া নেশাখোর, পকেটমারতো আছেই। মোটকথা পরিবেশ নাই। থাকলে সবসময় ফুটওভার বিজ্র ব্যবহার করতাম।

ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে পথচারীদের অনাগ্রহের বিষয়ে আশুলিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ঈমাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও ব্যবহার না করাটা রীতিমত অপরাধ। জীবনের ঝুঁকি রয়েছে চরম। তাছাড়া এর ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। পথচারীরা যেন ফুটওভার ব্রিজমুখী হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সাভার সার্কেলের অতিরক্তি পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাইদুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, মানুষকে সচেতন হতে হবে। অন্যথায় সমাধান আসবে না।